নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়পুর: আব্দুল আজিজ ফাহাদ, বয়স ১৩ বছর। জন্ম থেকেই সে বাক প্রতিবন্ধি। ষষ্ঠ শ্রেনিতে বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় সপ্তম শ্রেনিতে অধ্যায়ন করতে পারছেনা। সে স্কুলে যেতে চায় ও পড়াশুনা করতে চায়। বর্তমানে সে বাড়িতে কাঁদছে। তার পিতা একজন ক্ষুদ্র মোবাইল ব্যবসায়ী। প্রতিবন্ধি ছেলেকে স্কুলে সপ্তম শ্রেনিতে ভর্তি করার জন্য স্কুলের শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে তিন মাস দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোন সহযোগিতা পাচ্ছেনা। আব্দুল আজিজ ফাহাদ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর মার্চ্চেন্টস একাডেমীর ৬ষ্ঠ শ্রেনির শিক্ষর্থী ও পৌরসভার দেনায়েতপুর গ্রামের মোবাইল ব্যবসায়ী আমিন কাজলের ছেলে। এঘটনায় সহপাঠি, অভিভাবক ও সচেতন মহলের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
শনিবার (১৭ মার্চ) প্রতিবন্ধি ছাত্রের পিতা মোঃ আমিন কাজল জানান, আমার একমাত্র বাক প্রতিবন্ধি ছেলেটিকে নিয়ে বড় বিপাকে আছি। ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ২.৭৫ জিপিএ গ্রেডে উত্তীর্ন হয়। অনেক কষ্ট করে ফাহাদকে ইউএনও ও সাংবাদিকসহ একাধিক ব্যক্তির সহযোগিতায় রায়পুর মার্চ্চেন্টস একাডেমীতে ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে ভর্তি করি। মোটামুটি সে শিক্ষক ও পরিবারের সহযোগিতায় সব পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ করে। সপ্তম শ্রেনিতে ফাহাদকে ভর্তি করার জন্য গত আড়াই মাস ধরে প্রধান শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে গিয়েও কোন সহযোগিতা পাছিনা। ছেলেটি স্কুলে যেতে না পারায় বাড়িতে কান্নাকাটি করছে। তার অসহায় প্রতিবন্ধি ছেলের শিক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
জেলা তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এসএম জোবায়ের বলেন,
কোন প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। তাকে লেখাপড়া করার সুযোগ করে দিতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল প্রতিবন্ধি শিশুদের অধিকার ও শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন। প্রধান শিক্ষক হয়ে ছাত্রের প্রতি এ অমানবিক কাজ মেনে নেওয়া যায় না।
মার্চ্চেন্টস একাডেমীর পরিচলনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ ও প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী পাটওয়ারী বলেন,
ছেলেটির লেখাপড়া মোটেই ভালো না। ক্লাশে পাঠদানের সময় অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে মারধর করে। তাকে অন্য স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র দিতে চাইলেও অভিভাবক অস্বীকৃতি জানান।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শিল্পি রানী রায় ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ কামাল হোসেন জানান,
৬ষ্ঠ শ্রেনির শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধি মোঃ আব্দুল আজিজ ফাহাদ সপ্তম শ্রেনিতে পাঠদান করার জন্য প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক কেন ভর্তি নিচ্ছেন না তা কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0Share