নিজস্ব প্রতিনিধি, রামগঞ্জ: রামগঞ্জ ফতেহপুর জেইউ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে পিটিয়ে আহত করেছেন একই মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও যুবলীগ নেতা রাকিবুল হাসান মাসুদ। সৃষ্ট ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২১ মার্চ ) দুপুরে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষকে তার বাড়ীতে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। বর্তমানে অধ্যক্ষ রামগঞ্জ ফেমাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্লাশ বর্জন করে মাঠে জড়ো হয়। স্থানীয় সূত্রে ও আহত অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ জানান, বিগত অনেক দিন থেকে মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগ নেতা রাকিবুল হাসান মাসুদ মাদ্রাসার বিভিন্ন বিষয়ে বাধা দেয়ার কারনে শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আটকিয়ে রাখার ও অভিযোগ করেন কয়েকজন শিক্ষক।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের বেতন ৮মার্চ দেয়ার কথা থাকলেও সভাপতি স্বাক্ষর না দেয়ায় বেতন উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। সমাধানে অধ্যক্ষ বার বার সভাপতিকে মোবাইলে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেন নি। বিষয়টি অধ্যক্ষ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করলে বুধবার দুপুরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ ও অফিস সহকারী নুর হোসেনকে বেতন বইতে স্বাক্ষর করার কথা বলে সভাপতি রাকিবুল হাসান মাসুদ তার বাড়ীতে ডেকে নেন।
এ সময় সভাপতি অফিস সহকারী নুর হোসেনকে মাদ্রাসায় চলে যেতে বললে নুর হোসেন মাদ্রাসার আসার কিছুক্ষন পরেই অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে চড়-থাপ্পড় ও শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করেন। কয়েক মিনিট পর অধ্যক্ষ লাইব্রেরীতে এসে সকল শিক্ষকদের সাথে সভা ডেকে বিষয়টি জানানোর এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকরা অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে রামগঞ্জ ফেমাস হসপিটালে নিয়ে আসলে কিছুক্ষন পর সভাপতি রাকিবুল হাসান মাসুদও হসপিটালে চলে আসেন।
এ ঘটনায় যুবলীগ নেতা ও মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রাকিবুল হাসান মাসুদ জানান, অফিসে সিসি ক্যামেরা আছে আমি অধ্যক্ষকে কিছুই করিনি। উনি অজ্ঞান হওয়ায় আমি তাকে উদ্ধার করে হসপিটালে ভর্তি করিয়েছি। তবে তিনি এসময় আরো জানান, মাদ্রাসায় কোন সভা-সেমিনারে আমাকে জানানো হয় না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ভূইয়া জানান, আমি লামনগর একাডেমীর ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে এসেছি। তবে বিষয়টি মাদ্রাসা শিক্ষকরা আমাকে মোবাইলে অবগত করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু ইউসুফ জানান, একজন অধ্যক্ষের গায়ে হাত তোলা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষক আমার সাথে দেখা করেছেন। এছাড়া শিক্ষকদের বেতন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না দিয়ে আটকিয়ে রাখা সভাপতির কাজ নয়।
0Share