নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়পুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটির নির্বাচন হওয়ায় শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। তারা একে অপরকে বলছেন গত ২১ বছর পর ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টিতে ভোটারদের স্বতষ্পূর্ত অংশ গ্রহনে নির্বাচন যেন এক জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় ইতিহাস সৃষ্টি হল। বৃহস্পতিবার কেরোয়া ইউনিয়নের লুধুয়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী লুধুয়া এমএম উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটির ৫টি অভিভাবক সদস্য পদে ১১জন প্রার্থী নির্বাচন অংশ নিয়ে একজন নারীসহ ৫জন বিজয়ী হয়েছেন। পরে কোন এক তারিখে নির্বাচিত ৫জনসহ প্রধান শিক্ষক, দাতা সদস্য ১জন, শিক্ষক প্রতিনিধি ৩জনসহ মোট ১১জন সদস্য সভাপতি নির্বাচিত করবেন বলে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা রয়েছেন।
সকাল ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ২টি কক্ষ্যে সহকারি শিক্ষক ও শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের দিয়ে ১১জন প্রাথীর এজেন্টদের মাধ্যমে ৫০৪জন ভোটারের মধ্যে ৩৬১জন পুরুষ ও নারী ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করেন এবং এতে ৫৫ ভোট নষ্ট হয়।
এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশংঙ্কা হওয়ায় বুধবার রাতে একই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার ও বিএনপি নেতা মোঃ আজম হোসেন, জয়নাল ও ইউছুফসহ ৪জনকে পুলিশ আটক করলেও প্রার্থীদের সুপারিশে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ পরিচালনা কমিটির নির্বাচন করতে সকাল ৯টায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, থানা পুলিশ, গ্রাম পুলিশ, আনসারদের পাহাড়ায় সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষন এবং কয়েকজন প্রধান শিক্ষক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ শত শত গ্রামবাসী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই নির্বাচন উপভোগ করেন।
নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যরা হলেন, কেরোয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির বাহার (২৩৫ ভোট), একই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম সরকার (২৫৫ ভোট), সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক শুকুর আহাম্মেদ মাস্টার (২৫৭ ভোট), শিক্ষানুরাগী সামছুল হুদা (কালু) (২২৯ ভোট) ও সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক উম্মেহানী সুলতানা (২৩৫ ভোট)।
কয়েকজন অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগী জানান, রায়পুর একটি সুনামধন্য উপজেলা। ৭টি বেসরকারি কলেজ ও ৫৩টি মাধ্যমিক (স্কুল ও মাদ্রাসা) এবং ২৭১টি সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার জন্য দক্ষ ও শিক্ষিত পরিচালনা কমিটির প্রয়োজন হয়। শৃংখলা ও ভাল ফলাফলের মধ্য দিয়ে তখনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়। কিন্তু গত ২১ বছর এই উপজেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্বাচন হচ্ছে না। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে ওই দলের নেতারা ক্ষমতা বা টাকার বিনিময়ে গোপনে পরিচালনা কমিটি গঠন করে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং হয়ে আসছে। জাতীয় নির্বাচনসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানাই।
0Share