নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়পুর: বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় হাসপাতালে এসে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে ডাক্তারের তালাবদ্ধ কক্ষের সামনে বসে আছি। সকাল সাড়ে ১০ টা বাজলেও কোন ডাক্তারের খবর নেই। কর্মচারীদের জিজ্ঞেস করলে তারা অট্টহাসি হাসে। নিরুপায় হয়ে বাড়ী ফিরে যাচ্ছি। এ কথাগুলো বলছিলেন চরপাতা গ্রামের আকবর আলী হাজী বাড়ীর গৃহবধু লাখি আক্তার। তার সাথে একাধিক অভিভাবক হাসপাতালের ডাক্তার নার্সদের অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টা ২০ মিনিটে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ৫০ শষ্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গেলে এ প্রতিনিধির কাছে অসহায় রোগীরা অভিযোগ করেন।
মরিয়ম বেগম, রুমা বেগম, আমিরের নেছা বলেন, সকাল ৯টায় থেকে সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কক্ষের সামনে টিকেট কাউন্টারে প্রায় ২০ রোগী তাদের অসুস্থ শিশু ও স্বজনদের নিয়ে বহি:বিভাগ কাউন্টার থেকে ৫ টাকার টিকেট নিয়ে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করি। ডাক্তার না আসায় আমরা বাড়ী চলে যাচ্ছি। সরকারি হাসপাতাল প্রায় সরঞ্জামসহ সবকিছু থাকলেও শুধু ডাক্তার নেই। ভর্তিকৃত রোগীদের সকালের নাস্তা কলা, ডিম ও পাউরুটি সরবরাহ করলেও তা বাসি ও নিন্মমানের হওয়ায় তা ডাষ্টবিনে ফেলে দেয়। তারা বাহির থেকে খাবার কিনে এনে নাস্তা করতে হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দুর্ণীতি অনিয়মের মধ্যেই সেবা চলছে। আমরা কার কাছে গিয়ে বিচার চাইবো। এদিকে নিন্মমানের খাবার নাস্তা বিতরনের বিষয়ে ঠিকাদার আরমান হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
হাসপাতাল সূত্রে জানাযায়, বর্তমানে নেত্রকোন থেকে আগত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডা: মাহবুব আরেফিন, ডা. বাহারুল আলম ও ডা. সাইফুল ইসলাম ছুটিতে আছেন। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আব্দুল্লা জায়েদ, মেডিকেল অফিসার ইশরাত জাহান এনি, অরূপ পাল, খালেদ মাহমুদ তারেক, শামিমা নাসরিন ও দন্ত ডাক্তার শাফি সরকার সহ ৮ জন নার্স হাসপাতালেই রয়েছে। হয়তো বাসায় ব্যস্ততার কারনে হাসপাতালের কক্ষে আসতে দেরি হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে তিন কর্মচারী জানান, ডাক্তারের সম্পর্কে বক্তব্য দিয়ে একবার বিপদে পড়েছি। কোন বক্তব্য দিতে চাই না। আপনারা বিপোর্ট করলেও কোন লাভ হবে না। এটি মরা হাসপাতাল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার সাইফুল ইসলাম ও ডাক্তার বাহারুল আলম মোবাইলে জানান, আমরা ঢাকায় প্রশিক্ষণে আছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডা: মাহবুব আরেফিন দু’দিন আগে যোগদান করার পর ছুটিতে আছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত অন্য ডাক্তাররা উপস্থিত না হওয়াটা দু:খজনক। রোববার হাসপাতালে এসে চা খেয়ে যাবেন।
এ ঘটনা লক্ষ্মীপুর-২ রায়পুর সাংসদ মোহাম্মদ নোমান ঘটনা জেনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
0Share