লক্ষ্মীপুর জেলার উপকূলীয় অঞ্চল ও মেঘনার ভাঙ্গন কবলিত ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত রামগতি উপজেলা। উপজেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হচ্ছে রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র চর আলেকজান্ডারে অবস্থিত ৩১ শয্যা (হাসপাতাল) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চলছে ২০ শয্যা হাসপাতালের অবকাঠামোর মধ্যে। উপরে ফিটফাট দেখা গেলেও নানান সমস্যার মধ্য দিয়ে প্রতিদিন স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসক সংকটে ভুগছে রামগতির স্বাস্থ্য বিভাগ। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার ও জনবল সংকটে দিন দিন ভেঙ্গে পড়তে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। রামগতি উপজেলার ০৮টি ইউনিয়নে ৮জন মেডিকেল অফিসারসহ রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭ জন চিকিৎসক থাকার কথা কিন্তু এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য রয়েছে মাত্র ০৭ জন মেডিকেল অফিসার। এরমধ্যে ৩জন মেডিকেল অফিসার সংযুক্তিতে ল²ীপুর সদর হাসপাতাল ২জন ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১জন কর্মরত আছেন। হাসপাতালের মোট জনবলের ৬৫% এরও বেশি পদ শূণ্য।
এছাড়াও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অর্থাৎ জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, সার্জারী এনেসনোসিয়া, গাইনী পদ এখন পর্যন্ত শূণ্য। দীর্ঘদিন যাবৎ মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, এক্স-রে টেকনোলজিষ্ট, অফিস সহকারী, হিসাবরক্ষক, ওয়ার্ড বয়, এমএলএসএস, পিয়ন, সুইপার খালি পদের বিপরীতে নেই কোন নিয়োগ।
গত মে মাসের ভর্তি রেজিষ্টার থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫ পাঁচ জন রোগী, আউটডোরে চিকিৎসার জন্য এসেছে ৯ হাজার ৪’শ জন রোগী, নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ৩৭টি।
সচেতন এলাকাবাসী জানান, অপর্যাপ্ত ডাক্তার, জনবল সংকটের মধ্যদিয়ে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। প্রতি মাসে গড়ে ৩৫-৪০টি নরমাল ডেলিভারি হচ্ছে উপজেলা কমপ্লেক্সে। উপকূলীয় অঞ্চলের অবহেলীত বিশাল জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবার একমাত্র প্রাণকেন্দ্র এটি। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে শত শত রোগী আসে। এই চিকিৎসা সেবাকে আরো ত্বরান্বিত করতে শতভাগ জনবল প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা খুবই জরুরি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: কামনাসীস মজুমদার জানান, বর্তমানে করোনার মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি হওয়াতে ও মেডিকেল অফিসার সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুল গাফ্ফার বলেন, সংকটের বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনের সংসদ সদস্য মেজর(অব.) আবদুল মান্নান এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখার জন্য নির্দেশ দেন।
উপজেলাবাসীর প্রত্যাশা অতিদ্রুত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি হস্তক্ষেপ করার মাধ্যমে পর্যাপ্ত মেডিকেল অফিসার, শতভাগ জনবল নিয়োগ করবে।
0Share