লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরগাজী, চর আবদুল্যাহ ও চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন সহ অধিকাংশ ইউনিয়নের লক্ষাধিক সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় ওষুধের দোকানিই একমাত্র ভরসা।
চরাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসারের পদটি শুন্য। মেডিকেল অফিসারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে রামগতি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সাধারন মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে। হাতের নাগালে চিকিৎসক না পেয়ে গ্রামের মানুষ বাধ্য হয়ে বিভিন্ন ঔষধের দোকান থেকে দোকানির পরামর্শ অনুযায়ি ঔষধ সেবন করছেন। কেউ ভালো হচ্ছে, কেউবা তার রোগ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, নোয়াখালী কিংবা ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। এইভাবেই চলছে রামগতি উপজেলার এসব ইউনিয়নের খেটেখাওয়া মানুষের জীবন ব্যবস্থা। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে মৌলিক অধিকারের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা অন্যতম আর এই স্বাস্থ্য সেবা থেকেই বঞ্চিত ওই ইউনিয়নের মানুষগুলো।
সরেজমিনে চরগাজী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে গেলে দেখা যায় মেডিকেল অফিসার ছাড়াই চলছে ঢিলেঢালা ভাবে চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম। চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে দেখা যায় আরেক চিত্র, নামমাত্র চিকিৎসা সেবাও পাচ্ছেন না রোগীরা। সেকমো পদটি থাকলেও তিনি প্রতি মাসে একবার আসেন ব্যস্ত চিকিৎসক (ডিএমএফ) রাসেল আমিন বাবু। রোগীদের কাছ থেকে জানা গেছে, তিনি নাকি ক্লিনিক নিয়ে ব্যস্ত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে আসার সময় নেই। মাঝেমধ্যে আসেন কিন্তু তা রোগীদের সেবা দিতে নয়, আসেন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে জানান এলাকাবাসী।
এই বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: বেলাল হোসেন জানান, বার বার বলা সত্বেও চিকিৎসক (ডিএমএফ) রাসেল আমিন বাবু কারো কথাই শুনছে না। তার ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামনাশিস মজুমদার নিকট বলেন, সকল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসারের পদটি শুন্য। মেডিকেল অফিসার কম থাকায় ইউনিয়ন পর্যায়ে এ সেবাটি চালু করা যাচ্ছে না।
রামগতি বাজারের এক ঔষধ বিক্রেতা ও পল্লী চিকিৎসক জানায়, পর্যাপ্ত মেডিকেল অফিসার না থাকায় সাধারণ মানুষ আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে আসেন। মেডিকেল অফিসারের অনুপস্থিতে রোগীরা আমাদের কাছে আসেন বলেই আমরা বাধ্য হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি।
জনসংখ্যা হারে মেডিকেল অফিসার না থাকায় মানুষ বাধ্য হয়ে ঔষধ দোকানির পরামর্শ অনুযায়ি ঔষধ কিনতে হচ্ছে রোগীদের। গ্রামাঞ্চলে মেডিকেল অফিসারের বিকল্প নেই; নচেৎ উপকূলের সাধারণ মানুষগুলো সঠিক চিকিৎসা সেবা না পেয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করবে। এ অঞ্চলের খেটেখাওয়া মানুষগুলো দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা অতিদ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি হস্তক্ষেপ করবেন। এছাড়া যে সকল চিকিৎসক দায়িত্বে অবহেলা করছে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তি কামনা করছেন।
0Share