মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের দাবিতে লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১০ টায় উপজেলার রামগতি বাজারে বড়খেরী ফাউন্ডেশন ও বাজারের ব্যবসায়ীদের যৌথ উদ্যোগে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এতে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও বাজারের ব্যবসায়ী, সওদাগর ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আহাম্মদ উল্যাহ সেলিম, উপজেলা মহিলা আ’লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য মোসা: রোপেনা আক্তার, বড়খেরী ফাউন্ডেশনের সভাপতি মাহবুব আলম নয়ন, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ এবং বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতৃবৃন্দসহ প্রমুখ।
বক্তরা বলেন, এরআগের একটি ভাঙন রোধ প্রকল্পে রামগতি উপজেলায় সাড়ে তিন কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণে সেনাবাহিনী কাজ করেছিল। সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত বাঁধের ফলে আলেকজান্ডার এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের পাশাপাশি গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। পানিউন্নয়ন বোর্ডের তত্ত¡াবধানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দিয়ে করলে কাজ না করে তাঁরা টাকা হাতিয়ে নেবে। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দিয়ে দ্রুত বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে রামগতি ও কমলনগরকে রক্ষা করার দাবি জানান তাঁরা।
এরআগে গত ২৪ আগস্ট রামগতি রক্ষা মঞ্চ ও রামগতি-কমলনগর অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
প্রসঙ্গত, মেঘনা নদীর “বড়খেরী, লুধুয়াবাজার এবং কাদিরপন্ডিতেরহাট বাজার’ তীররক্ষা নামের ৩৩.২৬কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পটি (চৎড়লবপঃ ঈড়ফব ২২৪৩৩৭৯০০) গত ১ জুন তারিখে পাশ করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক। এতে মোট ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
গত ১৭ আগস্ট ই-জিপি টেন্ডার পোর্টাল এবং ১৮ আগস্ট পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, ১১টি লটের মধ্যে ১ম লটে ২৭৫ মিটার, ২য় লটে ২৭৫ মিটার, ৩য় লটে ৩৫০ মিটার, ৪র্থ লটে ৩৫০ মিটার, ৫ম-১০ম লটের প্রতিটিতে ৩০০ মিটার এবং ১১তম লটে ৩৫০ মিটার সহ মোট ৩ হাজার ৪০০ মিটার কাজ হবে। এদিকে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারী এবং নদী বাঁধ নির্মাণ আন্দোলনের সাথে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি টেন্ডার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে পোস্ট দেয়া শুরু করে।
তাঁদের দাবী মেঘনা নদী ভয়াবহ ভাঙ্গনে থেকে ল²ীপুরের রামগতি এবং কমলনগর উপজেলা কে রক্ষার জন্য একমাত্র উপায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দিয়ে এ কাজ করানো। কিন্তু টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরপরই তাদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে কাজ হয়তো সেনাবাহিনী দিয়ে করা হবে না। আর যদি সেনাবাহিনী দিয়ে কাজ না করা হয়, তবে দুর্নীতির আশংকা থাকবে ব্যাপক। সেনাবাহিনীর কাজের মান বিশ্বমানের। আর টিকাদারের মাধ্যমে শেষ হওয়া কমলনগরের মাতবরহাট বেঁড়ি বাঁধটি এখন হুমকির মুখে।
0Share