সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর বুধবার , ১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
দূর্গম কানিবগার চরের প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে এসএসসি পাশ করেছে, সিমু

দূর্গম কানিবগার চরের প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে এসএসসি পাশ করেছে, সিমু

দূর্গম কানিবগার চরের প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে এসএসসি পাশ করেছে, সিমু

সানা উল্লাহ সানু: আঁকাবাঁকা সরু পথ ধরে প্রায় ২ ঘন্টা মোটরসাইকেল চালিয়েও চরের কোথায়ও একটি স্কুল পাওয়া যায়নি। চরের মধ্যে কোন রাস্তা নেই। এর মাঝে কিছু দূর পরপর আকাঁবাঁকা খাল। জীবিকার তাগিদে যারা চরে বসবাস করে এমন পরিবারের হাজার শিশু কিশোর স্কুলে পড়তে পারে না। কারণ দূর্গম চরটিতে কোন স্কুল নেই। শুষ্ক মৌসুমে স্কুলে যেতে পাড়ি দিতে হয় ১১ কিলোমিটার আর বর্ষায় পানিতে থাকে টইটম্বুর।

কিন্ত চরের এমন দূর্গমতা আর হাজারো প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে চরের একমাত্র কিশোরী সিমু আক্তার।

সিমু লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চর বংশী ইউনিয়নের দূর্গম কানিবগার চরের বায়ারঘাট সংলগ্ন মজিবুল সিকদারের মেয়ে। সে লক্ষ্মীপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে চলতি বছরের এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ফিস কালচার এন্ড ব্রিডিং বিভাগ থেকে জিপিএ-৪.৩২ পেয়ে উর্ত্তীন হয়েছে। সিমু ভবিষ্যতে একজন শিক্ষক হতে চায়।

চরের নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে সরেজমিনে সিমুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় দুটি খড়েরগাদির স্তুপ আর কয়েকটি কলাগাছের পিছনে ছোট একটি ঝুপড়ি। এটাই তাদের বাড়ি সিমুর মা সুরাইয়া বেগম জানান, কানিবগার চরের বুকে হাজার হাজার একর জমি খালি পড়ে থাকলেও তাদের নিজস্ব কোন জায়গায় নেই। একজনের জায়গায় তাদের এ ঝুপড়ি।

সুরাইয়ার স্বামী মজিবুল সিকদার খেয়া নৌকার মাঝি। এ দম্পতির তিন মেয়ের মধ্যে মেজো মেয়ে সিমু আক্তার এবার এসএসসি পাশ করেছে। ছোট মেয়ে পপি আক্তার ফাহান একই বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেনীতে পড়ে। বড় মেয়ে শিউলি এসএসসি পাশের পর বিয়ে দিয়েছেন।

কিন্ত সিমুর বাবা এবং মা দুজনই নিরক্ষর। নিজেরা নিরক্ষর হলেও তিন মেয়েকে নিরক্ষর রাখতে চান নি এ দম্পতি। তাই শত প্রতিকূলতাকে ডিঙ্গি তিন মেয়েকেই পড়াতে চেয়েছেন তারা।

এ পর্যন্ত আসতে সিমুদের বহু সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
সিমু জানায়, ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়তে তাকে পায়ে হেঁটে কিংবা নৌকায় চড়ে বাড়ি থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে প্রাইমারি স্কুলে যেতে হয়েছিল। ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম পড়তে পাড়ি দিয়েছিল প্রায় ১০ কিলোমিটার।

পরে এক আত্মীয়ের সহযোগিতায় সিমু ফাহান দুবোন ভর্তি হয় লক্ষ্মীপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে। সেখানে অন্য ছাত্রছাত্রীদের সাথে সিমু আর ফাহান এক সাথেই পড়ে। ফাহান একসপ্তাহ স্কুলে যাওয়ার পর পরের সপ্তাহে যেতে পারে না। বর্ষার সময় বাড়িতেই থাকতে হয় তাকে।

সিমুর বাবা মজিবুল সিকদার জানায়, মেয়েদের কে পড়ালেখা করাচ্ছেন। কিন্ত তার নিজের একটুকরো জমি নেই। চরের হাজার একর জমি থেকে তিনি আশ্রয়ের জন্য একটুকরো জমি চান।

এদিকে সিমুর বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় শিক্ষক এমদাদ হোসেন জানান, সিমুরা দুবোন আমাদের প্রতিষ্ঠানে পড়ে। তবে তারা যে এত সংগ্রাম করে এখানে আসে তা আগে জানতাম না। এখন আমরা যেহেতু জেনেছি আমরা তাদের জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবো।

লক্ষ্মীপুর নিউজ আরও সংবাদ

নিষেধাজ্ঞা না মেনে রামগতির মেঘনায় মাছ ধরায় দায়ে জেলে আটক

রামগতিতে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে সভা

রামগতিতে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হলো একটি ইলিশ

মেঘনায় ২২ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ

মা ইলিশ রক্ষায় জনসচেতনতা সভা

রামগতিতে জিয়া মঞ্চের সংবাদ সম্মেলন

Lakshmipur24 | লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধিত নিউজপোর্টাল  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2025
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Muktizudda Market (3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com