মিসু সাহা নিক্কন: লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার রামগতি বাজারে ও জয়নাল মিয়ার তেমুহনিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে মালামালসহ প্রায় ২৬টি দোকানঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার জয়নাল মিয়ার তেমুহনিতে এবং এরআগে দুপুরে রামগতি বাজারের কলেজ রোডে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের দাবি। বৈদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে দুই স্থানে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা গেছে।
জয়নাল মিয়ার তেমুহনিরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানায়, বৈদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। গভীর রাত হওয়াতে স্থানীয় লোকজন ঘুমের মধ্যে থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়নি। খবর পেয়ে রামগতি ফায়ারসার্ভিসের ১টি ইউনিট আসার আগেই সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়। এ বাজারের প্রায় ২৬টি দোকানের মালামালসহ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে ছিল ওষুধের দোকান, কসমেটিক দোকান, মুদি দোকান, চায়ের দোকান, খাদ্যের দোকান।
এদিকে দুপুর ২টার দিকে রামগতি বাজারের কলেজ রোডে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৬টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ওষুধের দোকান, ডেন্টাল কেয়ার, কসমেটিক দোকান, মোটরসাইকেল মেরামতের দোকান, ডাক্তারের চেম্বার আগুন লেগে ভস্মিভূত হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্থ নাহার ফার্মেসীর মালিক শরীফুল ইসলাম নোমান কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি সর্বহারা হয়ে গেছি। আমার আর কিছুই রইল না। পরিবারের একমাত্র রুজির প্রধান উৎস, কিন্তু সেই দোকনটাই এখন ছাই হয়ে গেছে। আগুন লেগে ভস্মিভূত হয়ে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মালামালসহ আমার দোকনঘর ছাই হয়ে গেছে। অন্যদিকে এনজিও’র লোনের টাকা নিয়ে দু:চিন্তার মধ্যে আছি।
রামগতি বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, রামগতি ফায়ার সার্ভিস উপজেলা সদর থেকে ৩ কি.মি দূরে, সেখান থেকে রামগতি বাজারের দূরত্ব প্রায় ২৬ কি.মি। দূরত্বের কারণে মূলত সময়মত ফায়ার সার্ভিসের সেবা পাচ্ছে না এ অঞ্চলের লোকজন। রামগতি ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে সব শেষ হয়ে যায়। এরআগেও দুই দুই বার বাজারে আগুন লাগলে কোন কাজে আসেনি ফায়ার সার্ভিস।
রামগতি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) খোকন মজুমদার বলেন, বৈদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে এবং রামগতি ফায়ার সার্ভিসের ১টি ইউনিট কাজ করার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রামগতি বাজার এলাকায় দূরত্বের কারণে সময়মত পৌঁছানো মুসকিল হয়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্থুত করা হচ্ছে। বরাদ্দ পেলে সহায়তা প্রদান করা হবে।
বার্তা-03-24
0Share