বর্ষা মওসুমে রোদের রক্ত যত উজ্জ্বল হয় একটু একটু করে তত উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে। এরই মাঝে স্মৃতি রোমন্থনের মিলনমেলায় যুক্ত হয়েছে একঝাঁক তরুণ-তরুণী। হাসি-আড্ডা, স্মৃতিচারণ ও নানা আনুষ্ঠানিকতায় মেতে উঠেছিল লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রামগতি বাণী ভবানী কামেশ্বরী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) দিনব্যাপী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়ের ২০০৭ সালের এসএসসি ব্যাচের প্রাণবন্ত ঈদ পুনর্মিলনী।
অনির্বাণ আলোকশিখা ছড়িয়ে যাওয়া এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষকদের উপস্থিতিতে এই মিলন মেলায় শিক্ষকদের ফুল দিয়ে বরণ, আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ, আপ্যায়ন, শিক্ষকদের সন্মাননা স্মারক প্রদান, খেলাধূলা, র্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
২০০৭ সালে রামগতি বাণী ভবানী কামেশ্বরী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা বন্ধুরা বর্তমানে নানা পেশায় কর্মরত দেশ-বিদেশের বিভিন্নস্থানে। পুনর্মিলনীর এই উৎসবে বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দিতে এ দিন সকাল ৮টা থেকে স্কুল প্রাঙ্গণে আসা শুরু হয়।
ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে কৈশোরের পরিচিত মুখগুলোর সঙ্গে একত্রিত হয়ে সকল ক্লান্তি ভুলে বন্ধুদের সঙ্গে নতুন করে কাটানো সময় ক্যামেরাবন্দি করে রাখতে সবাই ছিলেন ব্যস্ত। স্কুল জীবনের গণ্ডি পার হওয়ার পরে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুত্বের এক একটা পরিচ্ছেদকে আরেকবার ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় ও স্মৃতিচারণে কাটে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব।।
বেলা সাড়ে ১১টায় বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষকদের উপস্থিতিতে স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মিসু সাহা নিক্কনের সঞ্চালনায় শুরু করা হয় আলোচনা সভা। এসময় স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন শিক্ষক গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী, মাওলানা আবু তাহের, আতাউর রহমান আজাদ বর্তমান শিক্ষক মো.আশ্রাফ উদ্দিন, মো. ইসতেয়াক উদ্দীন, মো. আবু তাহেরসহ অন্যান্যরা।
পুরনো দিনের স্মৃতিচারণসহ শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন আগত শিক্ষকরা। শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও। দুপুরের মধ্যাহ্ন ভোজ শেষ করে, দিনের শেষ ভাগে খেলাধুলা, র্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়। এমন প্রাণবন্ত আয়োজনের প্রশংসা করে শিক্ষকরা ধন্যবাদ জানায় আয়োজকদের।
রামগতি বাণী ভবানী কামেশ্বরী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল কুদ্দুছ জিল্লু, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ভূবন দেবনাথ, সহকারী শিক্ষক আলেয়া বেগম এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল শিক্ষককে সন্মাননা স্মারক প্রদান করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
এই ব্যাচের প্রধান আয়োজক মিসু সাহা নিক্কন, মো. তৌহিদুল ইসলাম ও ওসমান গনি জানান, পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৭ বছর পর স্কুল জীবনের সকল বন্ধুদের সাথে একত্রিত হলাম। অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বার বার মনে উদয় হলো আমরা ক্লাসে আছি। মন চায় আবার সেই স্কুল জীবনে ফিরে যেতে। একই সঙ্গে যারা এবার নানা কারণে উপস্থিত থাকতে পারেনি তাদের সঙ্গে নিয়ে পরবর্তী পুনর্মিলনী উৎসব আয়োজন করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
মিসু সাহা নিক্কন/বার্তা-২৪
0Share