এমএ এহসান রিয়াজ || কমলনগর | লক্ষ্মীপুর || লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে পল্লী বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অততের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে লোডশেডিং। প্রতিদিন অন্তত ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা এলাকাবাসীকে বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে। শুক্রবার, শনিবার ছুটির দিনেও ২৪ ঘন্টার মধ্যে টানা ১৫ ঘন্টাসহ ২০ ঘন্টারও বেশী বিদ্যুৎহীন থেকেছে কমলনগর উপজেলাবাসী।
এই অবস্থায় তীব্র তাপদাহে কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন শিশুসহ বয়স্ক রোগীরা। লেখাপড়ায় চরম বিঘ্ন ঘটছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাসপাতাল, ল্যাব করাতকলসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। তীব্র এ লোডশেডিংয়ের ফলে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে গ্রাহকদের মাঝে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করারও হুমকি দিয়েছেন অনেকে। অন্যদিকে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ তিনের একভাগেরও কম পাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান বিদ্যুৎ অফিস। উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় সুত্রে জানা যায়,কমলনগর উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ৫৬ হাজারের বেশি গ্রাহক রয়েছে।এর জন্য প্রতিদিন গড়ে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
এইচএসসি শিক্ষার্থী মাহদুল হাসান জানান,দিনে ও রাতে ২৪ ঘণ্টায় চার ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকেনা। একবার বিদ্যুৎ গেলে সর্বনিম্ন ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং থাকে।কোনো কোনো সময় টানা ৮ থেকে ১০ ঘন্টা পর ১০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎ আসে বলে তিনি আরো জানান
উপজেলার ফয়েজ আম আলিম মাদ্রাসার ইংরেজি প্রভাষক আবদুল করিম জানান,লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছি। শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। রাতের বেলায় ঘুম হারাম হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ঘুম শেষ। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৯-২০ ঘন্টাই বিদ্যুৎ না থাকাতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।
করইতলা বাজারে ওয়েল্ডিং মেশিনের দোকানের পরিচালক মোঃ রাসেল বলেন,বিদ্যুৎ না থাকায় সারা দিনেই বসে থাকতে হচ্ছে, কোনো ধরনের কাজ করা যাচ্ছে না। চরম দুর্ভোগ ও লোকসানের শিকার হচ্ছি। কমলনগর হসপিটাল,ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জামাল হোসেন বলেন, বিদ্যুতের চরম লোডশেডিং। সারাদিনে সর্বোচ্চ ১থেকে ২ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছি।বাকি সময় জেনারেটরের মাধ্যমে রোগীদের সেবা দিতে হয়। এখন দৈনিক ১৫ থেকে ২০ লিটার জ্বালানি তেল লাগে। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে আমরা লোকসানে আছি।
কমলনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম নিতেশ শাহা জানান,গরমে চাহিদা বেড়ে গেছে,এছাড়াও জাতীয় ভাবে বিদ্যুতের উৎপাদন কমে যাওয়ায় সরবারহ করা হচ্ছে কম। উপজেলায় ১০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩ মেগাওয়াট। যে কারণে এমন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। তবে দ্রুত এই অবস্থা থেকে উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
0Share