কামরুল হাসান হৃদয়: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন চেয়েছেন হারুনুর রশিদ। অথচ গত ১৭ বছর ধরে তিনি সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হারুনুর রশিদ হাজিরহাট ইউনিয়নের আবুল কালামের ছেলে। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত এমপিদের হয়ে প্রচার-প্রচারণায় সক্রিয় ছিলেন এবং দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে সরব উপস্থিতি ছিল তার। এমনকি তিনি এক সময় উপজেলা খামারি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, যা তৎকালীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাবেক এমপি মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সুপারিশে হয়েছে বলে জানা যায়।
৫ আগস্ট বর্তমান সরকার পদত্যাগের পর থেকেই হারুন রাতারাতি নিজের পরিচয় বদলে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হতে শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতা নির্বাচনের সময় তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
এ বিষয়ে একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমি ১৯৯১ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। হারুন আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মিছিল-মিটিং করেছেন, ভোট করেছেন। এখন তিনি হঠাৎ করেই বিএনপি নেতা! বিষয়টি মেনে নেওয়া কষ্টকর।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, হারুনের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে আপত্তি জানানো হলেও উপজেলা বিএনপির নেতারা এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে তৃণমূলের ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে।
এ বিষয়ে হারুনুর রশিদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি প্রাণিসম্পদের একটি প্রকল্পে জড়িত ছিলাম বলে আওয়ামী লীগের কিছু প্রোগ্রামে গেছি। তবে আমি তো ক্লাস করিনি, শুধু ভর্তি হয়েছিলাম!”—এ কথা বলে তিনি হাস্যরসও করেন।
এদিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম কাদের বলেন, “আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে মনোনয়নের শেষ সময়ে আসায় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ ছিল না।”
হারুনের প্রার্থিতাকে ঘিরে ইতোমধ্যে ওয়ার্ডজুড়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে ‘পথচ্যুত’ ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হলে দলীয় শৃঙ্খলা কোথায় দাঁড়াবে?
0Share