সানা উল্লাহ সানু: গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্তমন্ত্রী শাহজাহান খান ১ দিনের সংক্ষিপ্ত সফরে বুধবার উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর এসে নৌ বন্দর স্থাপন এবং ফেরিঘাটের বিভিন্ন দিক সরেজমিনে দেখার জন্য মতিরহাটঘাট এবং মজুচৌধুরীরহাট ঘাট পরিদর্শন শেষে একাধিক সমাবেশে যোগ দিবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে মন্ত্রী মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) রাাতেই লক্ষ্মীপুরে আগমন করবেন এবং জেলা সার্কিট হাউজে রাত্রি যাপন করবেন।
বুধবার সকাল ৯ টায় তিনি কমলনগরের মতিরহাট ঘাট পরিদর্শন শেষে স্থানীয় মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হবেন। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুনসহ জেলা উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
মতিরহাট ঘাট পরিদর্শন শেষে তিনি মজুচৌধুরীর হাট ফেরিঘাট পরিদর্শন করবেন। বেলা ১১টায় তিনি লক্ষ্মীপুর শহরস্থ নছির আহমদ ভূঁইয়া মিলনায়তনে প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন পেশাজীবির সমন্বয় মতবিনিময় সভা যোগদান করবেন এবং বিকালে সদর উপজেলার রাধাপুর হাই স্কুলের নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন। পরে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দিবেন।
এ সময় মন্ত্রীর সফর সূচীর বিভিন্ন স্থানে জেলার ৪ জন সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামীলীগ,যুবলীগসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
এ দিকে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত বছর মার্চ মাসে সংসদের এক অধীবেশনে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান জানিয়েছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের ভেতরে নতুন ৪টি নৌ-বন্দর স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বন্দরগুলো হচ্ছে, ‘কক্সবাজার জেলার টেকনাফ, নরসিংদী জেলার ঘোড়াশাল, কিশোরগঞ্জ জেলার চাচড়া এবং ফরিদপুর জেলার সিএন্ডবি।’ যে গুলো বর্তমানে বাস্তবায়নাধিন অবস্থায় রয়েছে।
অন্য দিকে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের সাথে পূবাঞ্চলের পন্য পরিবহনের জন্য উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরেও নৌ বন্দর স্থাপনের সুযোগ রয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দীর্ঘ দিন থেকেই লক্ষ্মীপুরে একটি নৌ বন্দর স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করছেন। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ লক্ষ্মীপুর সফরে আসলে তিনি এ জেলায় নৌ বন্দর স্থাপনের আশ্বাস দেন।
নৌ বন্দর স্থাপনের জন্য সম্ভাব্য স্থান হিসাবে কমলনগরের মতিরহাট বা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট ঘাট কে উপযুক্ত মনে করছেন স্থানীয়রা।
একই সময়ে স্থানীয়দের দাবি কমলনগরের মতিরহাট ঘাটটি বর্তমানে নৌ বন্দর বা ফেরিঘাটের জন্য ভৌগলিক সকল দিক থেকে সব চেয়ে উপযুক্ত এবং মতিরহাটে নৌ বন্দর স্থাপিত হলে বড় রকমের কোন ড্রেজিং করতে হবে না।
উল্লেখ্য, বিআইডব্লিউটিএ’র নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে ২৬টি নৌ-বন্দর রয়েছে। তারমধ্যে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৬ সালে ১০টি নদী বন্দর, ২০১০ সাল থেকে ২০১১ সালে ১২টি এবং ২০১৪ সাল থেকে ৪ নদী বন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এ দিকে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিস মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সাথে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ২১ জেলার যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে এ রুটটি দূরত্ব এবং সময়ের কারণে বর্তমানে যাত্রীদের কাছে এক দূর্বিসহ রুট হিসাবেই পরিচিত।
রুটটির চরম দূর্বিসহ এলাকা লক্ষ্মীপুরের মজুচেীধুরীর হাট থেকে দক্ষিণের কমলনগর উপজেলার মতিরহাট পর্যন্ত ডুবোচরে ভরপুর ১০ কিমি দূরত্বের অংশটি।
তাই এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীদের দাবি,
বর্তমান ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের পরিবর্তে ১০কিমি নদীপথ কমিয়ে ভোলা-মতিরহাট রুট করা হলে দক্ষিণ পূর্ব ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চ যাতায়াতে পরিবহনে সময় কমে যাবে কমপক্ষে ৩ ঘন্টা সাথে যান চলাচল বেড়ে যাবে কমপক্ষে দ্বিগুন আর বুধবার নৌ মন্ত্রী শাহাজাহান খানের বাস্তব পরির্দশনের পরপরই বুঝা যাবে এই রুটে ফেরির পরবতী গন্তব্য ।
0Share