গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুতের চরম সঙ্কট পরিলক্ষিত হচ্ছে। বরাদ্দ কম প্রাপ্তির পাশাপাশি সঞ্চালন লাইনের ত্রুটির কারনে এই সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। কোন কারনে এই সঞ্চালন লাইনের ত্রুটি সারানো গেলেও বিদ্যত সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হচ্ছেনা চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ বরাদ্দ না থাকায়। এই সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে ভালো উদ্যোগ হবে স্থানীয় পর্যায়ে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান করা গেলে। লক্ষ্মীপুরে যেহেতু গ্যাস নেই, আবার কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ সম্ভব নয় পরিবেশ বিপর্যয়সহ নানা কারনে। এ জন্য পরিবেশ বান্ধব বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের যথেষ্ট সম্ভাবতা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা যেতে পারে। বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের জন্য যে ধরনের পরিবেশ এবং যায়গার দরকার, সেই ধরনের একটি যায়গা হচ্ছে রায়পুরের কানিবগার চর। এটি রায়পুর উপজেলার ২ এবং ৮ নং ইউনিয়নে অবস্থিত।
জানা যায়, ১৯৯০ সালের দিকে চরটির অধিগ্রহন করেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন এবং তা গেজেট আকারে প্রকাশ হয় ২০০১ সনে। প্রায় ১৪০০ একর নিয়ে গঠিত ৫১ নং কানিবগা মৌজাটিতে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের বরাদ্দ দেয়া হয়নি। পুরোপুরিই সরকারের দখলে আছে। তবে নানা ছুঁতোয় এই চরটি এখন দখলে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালি চক্র। মেঘনা তীরবর্তী এবং এখানে জনবসতি না থাকায় এই চরটিতেই গড়ে উঠতে পারে বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এইখানে ৫০ মেগাওয়াটের একটি বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলেই পুরো জেলার বিদ্যুৎ সমস্যার নিরসন হতে পারে বলে জানিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
এই চরটির যে দৈর্ঘ্য তাতে অনায়াসে একটি মাঝারি আকারের বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট নির্মাণ করা যাবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিদ্যুৎ এবং এনার্জি বিশেষজ্ঞ মোল্লাহ আমজাদ হোসেন বলেছেন, কাছাকাছি জনবসতি নেই এমন দীর্ঘ নদীর কূল বা সমুদ্র সৈকতে বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা যেতে পারে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ অনেক কমে যাবে, এবং স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্যুতের সমস্যারও সমাধান হবে। এখন সময় এসেছে সরকারে কাছে লক্ষ্মীপুরবাসির এই দাবী জানানোর।
এর আগে দেশের প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ হয়েছিলো ফেনীর মাতামুহুরি সেচ প্রকল্পে। রায়পুরের কানিবগার চরে গড়ে উঠতে পারে বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
0Share