সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর শনিবার , ২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ দালালে, জিম্মি রোগী

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ দালালে, জিম্মি রোগী

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ দালালে, জিম্মি রোগী

এমআর সুমন: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘিরে অন্তত ২০ জনের একটি দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব দালালের হাতে জিম্মি রোগী ও তাদের স্বজনেরা। ক্তুভোগীদের অভিযোগ, ওয়ার্ডবয়দের বখসিস ও নার্সদের দুর্ব্যবহারের আখড়া যেন এই হাসপাতাল। দালালরা প্রতিনিয়তই এই হাসপাতাল থেকে রোগী বাগিয়ে নিয়ে অন্য ক্লিনিকে ভর্তি করানোর প্ররোচনা দেন রোগীর স্বজনদের।

হাসপাতাল সূত্রে ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালদের উৎপাত নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। হাসপাতালে গেলেই চোখে পড়ে দালালদের রোগী নিয়ে টানাটানির দৃশ্য। তাদের বাধা টপকে হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে কোনো রোগীর পৌঁছানো কষ্টের ব্যাপার। জোর করেই তারা রোগীদের নিজেদের পছন্দের বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে নিয়ে যেত চায়। আর রোগীরা কোনোমতে সরকারি এই হাসপাতালের চিকিৎসকের কক্ষে পৌঁছালেও নিস্তার নেই। চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হলে আরেক দফা টানাটানি শুরু হয়। এবার টানাটানি ব্যবস্থাপত্রে লেখা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। দালালদের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হবে।

শনিবার (২০ মার্চ) সকাল ৯ থেকে ১১ টা (দুই ঘণ্টাব্যাপী) সরেজমিনে হাসপাতালে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগ, স্বাস্থ কর্মকর্তার কক্ষ ও মূল গেটের সামনে দালাল ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা মাস্ক ও গ্লাভস পরে দাঁড়িয়ে আছেন বেশ কয়েকজন। তাদের কাজ হাসপাতালে আসা রোগীদের সিএনজি অথবা অ্যাম্বুলেন্স থামার পর রোগীকে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া। তবে, রোগী এলে স্বজনদের সঙ্গে তারা বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। এরপর রোগীকে কাঁদে তুলে ওয়ার্ডে রেখে আগের জায়গায় ফিরে যান তারা। এদিকে জরুরি বিভাগের ভেতরে দেখা গেছে ওই ৪-৫ জন যুবককে। তাদের হাতেও গ্লাভস। জরুরি বিভাগে রোগী ও স্বজনরা যাওয়া মাত্রই এই যুবকদের তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। রোগীর স্বজনদের পেছনে ঘুরতে থাকেন তারা। তারা কী রোগ, কী করবে—তা জানার পরপরই সুযোগ বুঝে স্বজনদের বাগিয়ে নিতে চেষ্টা করেন। স্বজনদের বলেন, ‘ক্লিনিকে ভালো চিকিৎসা হবে। স্যার ভালো করে দেখবেন। এখানে চিকিৎসা হয় না।

শিশু সন্তানকে চিকিৎসার জন্য সিমু আক্তার নামের চরপাতা গ্রামের একজন নারী ৩ টাকার টিনেক ৫ টাকায় দিয়ে অসুস্থ্য দুই মিশুকে নিয়ে এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে আছেন ডাক্তারের অপেক্ষায়। তার সাথে চরমোহনা গ্রামের বিথি আক্তার নামের আরেক নারীও ডাক্তারের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু ডাক্তার কোথায় আছেন কেও বলতে পারছেন না। এসম দু’জন ব্যক্তি এসে রোগী সম্পর্কে জানার পর তাকে বারবার অন্য হাসপাতালে যাওয়ার রোগী নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। আর রোগী অন্য হাসপাতালে ভর্তি করাতে ডাক্তারের জন্য ৪০০ ও নিজের জন্য ৫০ টাকা দাবি করেন। তবে, গরিব রোগী সিমু এই দালালের কথায় রাজি হননি। এতে ক্ষেপে যান ওই দালাল। তিনি সিমুকে আর জরুরি বিভাগের রিসিপশনেও যেতে দেননি।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, রোগী ভর্তি করার পর পরীক্ষা ও অপারেশনের জন্য ড্রেসিং করতে প্রতিবার সিজার অপারেশান করালেই ওয়ার্ডবয়কে দিতে হয় টাকা। এক্ষেত্রে সিজার অপরেশন করালেই ২’শ থেকে ৫’শ দিতে হয়।

অভিযোগ রয়েছে, দালালদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও বা হাসপাতাল থেকে অন্য ক্লিনিকে নিয়ে গেলেও তারা নির্বিকার থাকছেন। ‘ডাক্তারদের ম্যানেজ’ করেই দালালরা হাসপাতালে নিজেদের তৎপরতা চালান বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

হাসপাতালের দু’জন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় দু’টি প্রভাবশালী মহল দালাল চক্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাইলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না। মাঝেমধ্যে চিকিৎসকেরা দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে তাদের রোষানলে পড়তে হয়। মূলত এসব দালালকে নিযুক্ত করে আশপাশের বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর কর্তৃপক্ষ। তাদের সঙ্গে হাসপাতালের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশ থাকে।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জাকির হোসেন বলেন, এটি সঠিক যে দালাল চক্র এখানে সক্রিয় আছে। তাঁর বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এমন ঘটনা ঘটে। দালাল চক্র বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতায় উপজেলা আইনশৃংখলা সভায়ও দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উপস্থপন করেছি। উপজেলা প্রশাসন থেকে দালালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেলে এমন অবস্থা হতো না। নার্সদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যেন তারা রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার না করেন। হাসপাতালের ভিতরে ওষুধ কোম্পানির লোকদের নিষেধ করা হয়েছে। শুধু সরকারি হাসপাতাল নয়। বেসরকারি হাসপাতালেও একই অবস্থা।

স্বাস্থ্য আরও সংবাদ

সবাইকে ‘খুশি’ করে চলছে অবৈধ ৪৯ ইটভাটা ! তিন বছরে বেড়েছে ১১টি!

ছদ্মবেশে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান করলো দুদক 

রামগতিতে কোডেক’র ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

অবৈধ ইটভাটার মাটিবাহী ট্রাক্টর চলাচলে ক্ষতবিক্ষত সড়ক, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স | অর্ধেকেরও কম জনবল দিয়ে চলছে কার্যক্রম

লক্ষ্মীপুরের দত্তপাড়ায় বন্যার্তদের মাঝে বিন্যামূল্যে চিকিৎসা সেবা

Lakshmipur24 | লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধিত নিউজপোর্টাল  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2025
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Muktizudda Market (3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com