মিসু সাহা নিক্কন, রামগতি: উপকূলীয় অঞ্চল রামগতি উপজেলায় এবছর রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব কাটিয়ে রোপা আমনের এমন বাম্পার ফলন দেখে বেশ খুশি তাঁরা, কৃষকদের মুখে অফুরন্ত হাসি আর আনন্দের ঝিলিক ।
উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, যেদিকেই চোখ যায় সেদিকে দেখা মেলে পাকা ধান আর ধান। বেশির ভাগ জমিতে ধান পাকতে শুরু করেছে, তাই ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কৃষক। উঠানে কৃষাণীরা ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। উঠানে ছড়িয়ে আছে মুঠোয় মুঠোয় সোনালী সোনা। তাঁদের চোখে মুখে দেখা যাচ্ছে সোনালী ধানের সোনালী আভা। প্রতিটি গ্রামে এখন হেমন্তের ছোঁয়া। পাকা ধান হেমন্তকে আরো রাঙিয়ে দিয়েছে।
এদিকে এ অঞ্চলের কৃষকদের যেমন ব্যস্ত, মাঠ থেকে ফসল কেটে সিদ্ধ ও শুকিয়ে গোলায় মওজুত করা নিয়ে অন্যদিকে ব্যস্ত কৃষাণীরাও, নতুন ধানের রংবেরঙের পিঠা-পুলির প্রস্তুতি নিয়ে। গ্রাম বাংলার আকাশে বাতাসে এখন নতুন ধানের পূর্ণ আমেজ বিরাজ করছে।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব কাটিয়ে রোপা আমনের এমন বাম্পার ফলন পেয়ে আমরা খুশি। স্থিতিশীল বাজার ও ন্যায্য মূল্য পাওয়ার দাবী উপকূলের কৃষকদের। তাদের ফসলের উপযুক্ত মূল্য না পেলে আগ্রহ হারাবে কৃষক পরিবার। বুক ভরা অনেক কষ্ট নিয়ে একজন কৃষক বলেন বিগত সময়ে রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও আমরা তা বিক্রি করে উপযুক্ত মূল্য পাইনি। তবে, উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষকেরা আশাবাদী, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এবছর ন্যায্য মূল্য ও স্থিতিশীল বাজার পাবো।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় আবাদি জমির পরিমাণ প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর। আর তালিকাভুক্ত কৃষকের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। বিশেষ করে চর আফজল, টুমচর, দক্ষিন টুমচর, চর রমিজ, চর আবদুল্যাতে রোপা আমনের ফলন বেশি হয়। এছাড়াও দেশের সবচেয়ে বেশি সয়াবিন এ অঞ্চলে উৎপাদন হয়ে থাকে। এবছর রোপা আমনের আবাদি জমির পরিমাণ ২২ হাজার ৮ শত হেক্টর। রোপা আমনের ফসলী জমিতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ও লক্ষ্মীরগু নামক ছত্রাকে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫ শত হেক্টর জমি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. হযরত আলী জানান, কৃষকরা কৃষি অফিসে পরামর্শ করে সঠিক সময়ে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করেছে বলেই রোপা আমনের এমন বাম্পার ফলন হয়েছে। অল্প কিছু জমিতে ছত্রাক আক্রান্ত করেছে। ৩০% জমিতে ধান কাটা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, এবছর ২৮ টাকা কেজি দরে প্রতি মণ ১ হাজার ১২০ টাকা হারে কৃষক থেকে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আমন ধান সংগ্রহ করবে খাদ্য অধিদপ্তর। প্রকৃত কৃষক যাতে বঞ্ছিত না হয় সেদিকে নজরদারী করবে প্রশাসন।
0Share