নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোলা প্রান্তের ইলিশাঘাট ও লক্ষ্মীপুর প্রান্তের রহমতখালী ক্যানেলের মুখে নাব্যতা সঙ্কট ও ডুবোচরের কারণে শীত মৌসুমে হুমকিতে পড়তে যাচ্ছে দেশের বৃহত্তম ফেরি চলাচলের লক্ষ্মীপুর-ভোলা রুট।এ সংকট কাটিয়ে ওঠতে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীরহাটের ১০ কিমি দক্ষিণে ভাটিতে মতিরহাটে ঘাট স্থানান্তরের কথা চিন্তা করছে বিআইডব্লিউটিসি ।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডুবোচরে আটকা পড়ে কলমী লতা ও কনকচাপা নামে দুইটি ফেরি। লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটের মেঘনা নদীর মতিরহাট এলাকায় ৩২টি যানবাহন ও শতাধিক যাত্রী নিয়ে আটকা পড়ে ফেরি দুটি । এর আগে বিকালে ভোলা থেকে মজু চৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসে ফেরি দুইটি।
স্থানীয়রা জানান, এ নৌ-রুটে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীরা প্রায়ই বিশেষ করে শীত মৌসুমে সমস্যায় পড়তে হয়। জানা যায় দেশের একমাত্র এ উপকূলীয় ফেরি রুটটিতে প্রয়োজনীয় হাইড্রেলিক সার্ভেসহ নৌ সঙ্কেত নিশ্চিত না করায় রাত্রিকালীন ফেরি চলাচলও বন্ধ থাকে। ফলে চট্টগ্রাম-বরিশাল ও খুলনা বিভাগ ছাড়াও দেশের দু’টি সমুদ্রবন্দরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে প্রায়শই। অথচ বিশাল ওই ফেরি রুটটি পুরোপুরি সচল থাকলে চট্টগ্রামের সাথে বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলের সড়কপথের দূরত্ব প্রায় ৩০০ কিলোমিটার কমে যায়।
পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ পাটুরিয়া ও মাওয়া ফেরি সেক্টরের ওপর যানবাহনের চাপও অনেকটা হ্রাস করা সম্ভব বলে মনে করেন সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বিক্ষুব্ধ মেঘনা বক্ষে মাত্র দু’টি ফেরি দিয়ে ডুবোচরের মাঝে যানবাহন পারাপারের যে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, তা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি কিছুটা হাস্যকর বলেও মনে করছেন মহলটি।
এ সকল কারণে শীত মৌসুমে লক্ষ্মীপুর প্রান্তের ঘাটটি প্রায় আট কিলোমিটার ভাটিতে ‘মতিরহাট’এ স্থানান্তরের বিষয়ে চিন্তা করছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়।২০১৫ সালের মার্চ মাসে নৌপরিবহনমন্ত্রী মো: শাহজাহান খান সরেজমিন মতিরহাট ঘাট এলাকা পরিদর্শন করে বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখতে বিআইডব্লিউটিসি ও আইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাদের তখন নির্দেশ দেন। লক্ষ্মীপুর প্রান্তের ফেরি ঘাটটি মজুচৌধুরীর হাট থেকে মতিরহাটে স্থানান্তর করলে এ ফেরি সেক্টরের দূরত্ব প্রায় ৯-১০ কিলোমিটার হ্রাস করা সম্ভব হবে তিনি মতামতও দেন।। এতে করে পারাপারের সময় কমবে প্রায় এক ঘণ্টা। ফলে ফেরি চলাচলও বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন দায়িত্বশীল মহল।
এসব বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির জিএম-বাণিজ্য সাহাদত আলীর সাথে আলাপ করা হলে, লক্ষ্মীপুর প্রান্তের ঘাট মতিরহাটে স্থানান্তরের বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, খুলনা-বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বাস্তবায়নে এবং দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের জন্য ২০০৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিস চালু করে । এ রুটটি চালুর ফলে ভোলা-লক্ষ্মীপুর হয়ে চট্টগ্রামের সাথে খুলনার দূরত্ব ২শ ৪০ কিলোমিটার কমে যাওয়ায় প্রতিদিন মালবোঝাই শত শত ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, কনটেইনার যাতায়াত করছে এই রুটে।
আরো পড়ুন:
0Share