লক্ষ্মীপুর জেলা সয়াল্যান্ড খ্যাত শস্য ভান্ডার এবং হাইব্রিড ফসল সয়াবিনের মাদারল্যান্ড রামগতি। এ উপকূলীয় উপজেলায় এখন চলছে ফসলী ক্ষেতে কৃষাণ-কৃষাণীর দিনরাত অফূরান পরিশ্রম। কৃষির এ ভরা মৌসুমে সার ডিলারদের দাম বাড়ানোর কারসাজিতে কৃষক দিশেহারা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষি বিভাগের নিযুক্ত ৯ জন সার ডিলাররা সরকার নির্ধারিত মূল্যে প্রতি কেজি ইউরিয়া ২২ টাকা প্রতি বস্তা ১১০০টাকা, টিএসপি ২২ টাকা প্রতি বস্তা ১১০০টাকা, ডেব ১৬ টাকা প্রতি বস্তা ৮০০টাকা আর এমওপি ১৫ টাকা প্রতি বস্তা ৭৫০টাকা দরে বিক্রি করার কথা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সরকারী দরে বিক্রির কথা থাকলেও তারা প্রতি কেজি সারে ৫ থেকে ১০ টাকা বর্ধিত দরে বিক্রি করা হচ্ছে। একদিকে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষক জমি চাষ দিতে পড়েছে আর্থিক সমস্যায় অন্যদিকে ডিলারদের বর্ধিত দরে সার কিনতে গিয়ে তাদের অবস্থা যেন মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।পরিবহন খরচ বেড়েছে তাই সারের এমন দাম নেওয়া হচ্ছে দাবী সার ডিলারদের।
সার- ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে উৎপাদন খরচ দাঁড়াবে প্রায় দ্বিগুন। এদিকে বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার উপকূলীয় কৃষকের সুবিধার্থে কৃষি যন্ত্র কম্বাইন্ড হার্ভেষ্টার, রিপার, সিডার, পাওয়ার থ্রেসার, মেইজ সেলার ক্রয়ে দিচ্ছে শতকরা ৭০ ভাগ ভূর্তকি। আর তা নিয়ে কৃষি বিভাগের অসাধু কর্তা-ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগ। সরকারের ভূর্তকিতে দেয়া কৃষি যন্ত্রপাতি তারা রামগতির কৃষকদের নামে নিয়ে তা সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারী ডিলারের যোগসাজসে আর্থিক লাভে অন্য এলাকায় বিক্রি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে রামগতিতে ১২টি কম্বাইন্ড হার্ভেষ্টার, ১টি রিপার, ৭টি পাওয়ার থ্রেসার, ৪টি মেইজ সেলার ও ৭টি সিডার বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সুফলভোগীদের খোঁজে পাওয়া যায়নি।
এ সকল অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, আমরা বাজার মনিটরিং করছি সরকার নির্ধারিত দরে সার বিক্রি করতে হবে। এর বাইরে কাউকে সার নিয়ে ছাড় দেয়া হবেনা।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন বলেন, বর্ধিত দরে সার বিক্রির বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সার ডিলারদের সাথে বৈঠক করে দ্রুত সমাধান করতে বলা হয়েছে। ভূর্তকির কৃষি যন্ত্রপাতির অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
0Share