ঢাকা: টানা অবরোধ, হরতাল এবং রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে বাংলাদেশের আবাসিক হোটেলগুলোর ব্যবসায় চরম মন্দা চলছে। বাংলাদেশে এখন পর্যটনের মৌসুম । রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পর্যটনের এই মৌসুমে দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা অনেক কম। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না এলে তাদের লোকসানের বোঝা আরো বাড়বে।
দেশের বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে এখন প্রায়ই ফাঁকা থাকছে।অথচ বছরের এই সময়টাতে দেশি বিদেশি অতিথিদের দেখা যায় বিভিন্ন হোটেল।এদের অনেকেই আসেন ব্যবসার কাজে, আর অনেকেই পর্যটক।
প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভরা মৌসুম এবং অন্তত ৯০ শতাংশ হোটেলের রুমেই অতিথি থাকে। কিন্তু এ বছর সেটা ৬০/৭০ শতাংশে নেমে এসেছে।
রাজধানীর অভিজাত হোটেল সোনারগাঁওয়ের পাবলিক রিলেশন ম্যানেজার সালমান কবির বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এ বছর বিদেশি পর্যটকের উপস্থিতি অনেক কম। ব্যবসায়িক কারণে অনেক বিদেশি অতিথি এখানে আসেন, তারা এখানে লাগাতার হরতাল অবরোধের কারণে তাদের ব্যবসায়িক কাজ করতে পারবেন না বুঝে তাদের অনেক বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন। আর অনেক বিদেশি অতিথি ব্যবসায়িক কারণে অনেকটা বাধ্য হয়েই হোটেলে থাকছেন এবং হোটেলেই তাদের জরুরী মিটিংগুলো সেরে নিচ্ছেন।
তবে ঢাকার আরেকটি অভিজাত হোটেল র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হরতাল অবরোধের কারণে বিভিন্ন বুকিং বাতিল হলেও বিমানবন্দরের কাছে অবস্থিত বলে এই হোটেলটিতে বিদেশি গ্রাহকের আনাগোণা যথেষ্টই রয়েছে।
এদিকে ঢাকার বাইরে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম, পর্যটনের শহর কক্সবাজার ও সিলেটের হোটেল কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তাদের হোটেল ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
কক্সবাজার মারমেইড ইকো রিসোর্টের ম্যানেজার কাজী অনু জানান, পর্যটনের এ মৌসুমে তাদের রিসোর্টের অনেকটাই খালি পড়ে আছে, বাতিল হয়ে যাচ্ছে অনেক বুকিং।
তিনি আরো জানান, ডিসেম্বর মাসটা আসলে আমাদের সুপার পিকের মধ্যে পড়ে। বছরের শেষ দিনের জন্য (৩১ ডিসেম্বর) দুইমাস আগে থেকেই যেখানে কক্সবাজার পুরো ভরে যায়, সেখানে এখন কোন রিজার্ভেশনই নেই। আমার রিসোর্টে এমাসের শেষ কয়েকদিনের জন্য সবগুলো রুম বুকড ছিল। কিন্তু এগুলোও বাতিল হয়ে গেল কদিন আগে এই রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে।
কক্সবাজারের সি-গাল হোটেলের ম্যানেজার নুরুদ্দিন জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতিতে হোটেল মালিকরা লোকসানের মুখে পড়লেও এর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কর্মচারিরাও। অনেক হোটেল মালিক তাদের কর্মচারিদের ছুটি দিয়ে দিচ্ছেন কাজ নাই বলে। অনেক হোটেল বেতন দিতে পারছেস না কারণ তেমন আয় হচ্ছে না বলে।
তবে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসলে দেশের পর্য্টন শিল্প আরো বিপাকে পড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই।
0Share