সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর মঙ্গলবার , ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সকল সমুদ্র বন্দরের সংযোগ নেটওর্য়াক হতে পারে ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেতু

সকল সমুদ্র বন্দরের সংযোগ নেটওর্য়াক হতে পারে ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেতু

সকল সমুদ্র বন্দরের সংযোগ নেটওর্য়াক হতে পারে ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেতু

সানা উল্লাহ সানু: দ্বীপ জেলা ভোলাকে দেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ভোলার কালাবদর ও বরিশালের তেঁতুলিয়া নদীর ওপর দুটি সেতু নির্মাণের সিদান্ত নিয়েছে সরকার। গণমাধ্যম সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে। সেতু দুটি নির্মাণ হলে দ্বীপ জেলা ভোলার সঙ্গে সড়ক পথে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভূখন্ড যুক্ত হবে। পরবর্তীতে সড়ক পথে ভোলার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সংযোগ স্থাপনের জন্য ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হবে বলে এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, ভোলার নন্দিত রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ।

জোরারগঞ্জ-সোনাপুর-মতিরহাট সড়ক ও ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেতু
জোরারগঞ্জ-সোনাপুর-মতিরহাট সড়ক ও ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেতু

অন্যদিকে ৫৬কিমি দৈর্ঘ্যের নোয়াখালীর সোনাপুর এবং চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ সড়কটিকে লক্ষ্মীপুরের মতিরহাট পর্যন্ত মাত্র ২৪ কিমি সম্প্রাসারণ করা হলে ভোলা এবং চট্টগ্রামের মধ্যে সড়ক পথে ১০০ কিমি দূরত্ব কমে যাবে বলে মতামত দিয়েছেন, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা।
এরপরে যদি ভোলা-লক্ষ্মীপুর(মতিরহাট) সেতু নির্মাণ হয়, তাহলে দেশের ৩টি সমুদ্র বন্দরের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন চুড়ান্ত হবে। একই সময়ে সেতুটি উন্নত বাংলাদেশের প্রতীক হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিতি পাবে বলে মন্তব্য করেছেন, দেশের অর্থনীতিবিদরা।

আবার লক্ষ্মীপুর ও ভোলার স্থানীয়দের অভিমত হচ্ছে,

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মতিরহাট হতে মেঘনা নদীর উপর দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে ভোলার ইলিশাঘাট পর্যন্ত সোজা দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার, আর এই আট কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ হলেই ভোলা – লক্ষ্মীপুরে মাঝে চমৎকার সেতুবন্ধন স্থাপিত হবে। আর সেই সাথে চট্টগ্রাম বিভাগের সাথে বরিশাল বিভাগের সড়কপথে সংযোগ স্থাপিত হবে। এই সেতু নির্মিত হলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে উন্নয়নের পথে আরো একধাপ।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ ছাড়াও চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল-পিরোজপুর-মংলা-খুলনা মহাসড়ক বাস্তবায়নের জন্য মংলা-খুলনা সড়কের বেকুঠিয়ার কাছে কঁচা নদীর ওপর বাংলাদেশ-চীন ৮ম মৈত্রী সেতু নির্মাণ শেষ হলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগীয় সদরের মধ্যে সড়ক পথে আরো ১০৫ কিলোমিটার দূরত্ব কমে আসবে। প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালে চীন সরকারের সাথে অনুদান চুক্তি জরিপ ও চূড়ান্ত নকশা প্রণয়ন সম্পন্ন হয়েছে। এ সেতুটি নির্মিত হলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগীয় সদরের মধ্যে সড়ক পথে দূরত্ব আরো ১০৫ কিলোমিটার কমে যাবে।

বিশিষ্টজনদের মতামত হচ্ছে, ভোলা-লক্ষ্মীপুর একটি সেতু এবং ২৪কিমি সড়ক সম্প্রাসারণের পর চট্টগ্রামের সাথে খুলনা পর্যন্ত ২০৫ কিমি দূরত্ব কমে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন নিশ্চিত হবে। তবে সে স্বপ্নের প্রথম বাস্তবায়ন হচেছ ভোলা-বরিশাল সেতু আর পরেরটা হবে ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেতু।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ‘কনস্ট্রাকশন অব ভোলা ব্রিজ অন বরিশাল-ভোলা রোড ওভার দ্য রিভার তেতুলিয়া অ্যান্ড কালাবদর’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৭ সালে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, তেঁতুলিয়া ও কালাবদর দিয়ে বরিশাল থেকে ভোলার দূরত্ব সবচেয়ে কম। ৮ দশমিক ৬৪ কিমি দৈর্ঘ্যের চার লেনের সেতুটি বরিশাল থেকে ৭ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি তেঁতুলিয়া নদীর ওপর মধ্যবর্তী একটি চরে গিয়ে শেষ হবে। এরপর ওই চর থেকে আরেকটি ১ দশমিক শূন্য ৬৪ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সেতু ভোলার সঙ্গে সংযুক্ত হবে।
এদিকে সেতু নির্মাণের খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছে ভোলার ২০ লাখ বাসিন্দা। বর্তমানে ভোলা জেলার ২০ লাখ বাসিন্দাকে রাজধানী ঢাকাতে যেতে হলে নৌপথে বরিশাল কিংবা লক্ষ্মীপুর পৌঁছাতে হয়। এরপর যেতে হয় ঢাকা। এতে করে অতিরিক্ত কয়েক ঘন্টা সময় ক্ষেপন হয়।
নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, খুলনা ও রবিশাল বিভাগের লোকজনের সহজ সড়ক যোগাযোগের অংশ হিসেবে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সাথে নোয়াখালীর দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার কমিয়ে ৫৬ কিলোমিটার সোনাপুর(নোয়াখালী)-সোনাগাজী(ফেনী)-জোরারগঞ্জ (চট্টগ্রাম) সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। ফলে নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ১৮০ কিলোমিটার থেকে কমে ১০৫ কিলোমিটারে দাঁড়াবে। সোনাপুর-জোরারগঞ্জ সড়কটি চালু হলে সোনাপুর থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। বর্তমানে নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে চৌমুহনী-ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম শহরে পৌঁছাতে সাড়ে ৪ ঘণ্টা সময় লাগে। সড়কটি চালু হলে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর জেলা ছাড়াও খুলনা ও রবিশাল বিভাগের ২০টি জেলার ৪ কোটি অধিবাসী স্বল্প সময়ে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে।
সওজ কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে জানা গেছে, সড়ক নেটওয়ার্কটি মোট ৫৬.৫ কিলোমিটার। যার মধ্যে সোনাপুর পর্যন্ত ৩০.৫ কি.মি. সড়ক নোয়াখালী সড়ক বিভাগের, ফেনী সড়ক বিভাগের ১৯ কি. মি. ও চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের ৭. কি.মি।
তবে ৫৬ কিমি দৈর্ঘ্যরে নোয়াখালীর সোনাপুর এবং চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ সড়কটিকে লক্ষ্মীপুরের মতিরহাট পর্যন্ত আর মাত্র ২৪ কিমি সম্প্রাসারণ করা হলে ভোলা এবং চট্টগ্রামের মধ্যে সড়ক পথে প্রায় ১০০ কিমি দূরত্ব কমে যাবে।
কিভাবে ভোলা-চট্টগ্রামের দূরত্ব ১০০ কিমি কমে যেতে পারে ? এমন জিজ্ঞাসার জবাবে তথ্য মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, চট্টগ্রাম থেকে নোয়খালীর সোনাপুর পর্যন্ত আসা সড়কটি যদি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মতিরহাট পর্যন্ত আর মাত্র ২৪ কিমি বৃদ্ধি করা হয় তবে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভাবনীয় পরিবতন আসবে। পাশাপাশি ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেতু নির্মাণ করা হলে চট্টগ্রাম থেকে আসা সড়কটি সরাসরি ভোলাতে গিয়ে শেষ হবে। তখন সড়কটি হয়ে যাবে চট্টগ্রাম-ভোলা সড়ক। এরপর ভোলা-বরিশাল হয়ে মংলা কিংবা খুলনা গিয়ে শেষ হবে এ সড়ক।
যে ২৪ কিমি বৃদ্ধি করার পর পুরো যোগাযোগ চিত্রটি পরিবর্তন হয়ে যাবে তা বর্ণনা করতে গিয়ে জনাব মামুন জানান, সোনাপুর-জোরারগঞ্জ সড়কটিকে ভোলা নিয়ে যেতে হলে, সোনাপুর-বাংলাবাজার(নোয়খালী সদর) ৮কিমি এবং বাংলাবাজার-চৌধুরীবাজার হয়ে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের তোরাবগঞ্জ পর্যন্ত ৮কিমি, এবং তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়ক ৮কিমি বৃদ্ধি করতে হবে। এরপর মতিরহাট থেকে ভোলার ইলিশা পর্যন্ত সেতু নির্মাণের জন্য বাকি থাকবে ৮কিমি।
তিনি আরো জানান, ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেতু তৈরি বাকি ছাড়া অন্য পথগুলো তৈরি করা আছে। তবে এখন দরকার শুধু সংস্কার এবং সম্প্রসারণ।

বর্তমান ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি রুট
বর্তমান ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি রুট

 

উল্লেখ্য, বর্তমানে ভোলার ইলিশারঘাটের সাথে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরর হাট পর্যন্ত নৌ পথে ফেরি সার্ভিস চালু আছে। যার মধ্যে ভোলার ইলিশাঘাট থেকে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মতিরহাট পর্যন্ত দূরত্ব ৮কিমি। এরপর মতিরহাট থেকে সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরর হাটের দূরত্ব ২০ কিমি। ভোলা-লক্ষ্মীপুরের কম দূরত্বের স্থান ইলিশা-মতিরহাটের দূরত্ব মাত্র ৮কিমি।

বাংলাদেশের নদী সমুদ্র বন্দর সমূহ হচ্ছে, ১। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর। ২। খুলনা জেলার মংলা সমুদ্র বন্দর। ৩। পটুয়াখালী জেলার পায়রা সমুদ্র বন্দর।

 

লেখক: লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি, দ্য বিজনেস স্ট্যার্ন্ডাড

সম্পাদক, লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর ডটকম (সংবাদপত্র)
সম্পাদক, লক্ষ্মীপুর ডায়েরি (ইতিহাস-ঐতিহ্য গ্রন্থ)

মতামত | সাক্ষাৎকার আরও সংবাদ

কৃত্রিম ভুলুয়া এখন রামগতি ও সুবর্ণচরের দানব

শতবর্ষী টুমচর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা

রিপোজটরি সাইট গিটহাবে বাংলাদেশী ডেভেলোপার আরমান হাকিম সাগরের কান্ট্রিবিউশন

নিবন্ধনের জন্য প্রথমদিকে আবেদিত নিউজ পোর্টালগুলোর নিবন্ধন পেতে আর কত বছর?

স্বামীকে গলাকেটে হত্যা | ঘটনার এপিঠ-ওপিঠ

ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে বাংলাদেশেও জেন্ড সার্টিফাইড ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা বাড়ছে

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশনার নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত, তারিখ: 9/12/2015  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2024
Chief Mentor: Rafiqul Islam Montu, Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu.
Muktijudda Market (3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794 822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com