মতামত: নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে সাম্প্রতিক সময়ে রামগতি, লক্ষ্মীপুর, রামগঞ্জ এবং সর্বশেষ গত বৃস্পতিবার রায়পুরে বিক্ষোভ ও পরবর্তী নানা ঘটনা এবং জেলার পল্লী বিদ্যুত গ্রাহকদের ন্যায্য দাবি নিয়ে জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলো রবিবার তাদের প্রিন্ট সংস্করণে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে।
সম্পাদকীয়টি প্রকাশের মাধ্যমে জেলার ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সাথে প্রথম আলো একাত্মতা প্রকাশ করে সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের জন্য সরকার ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি যেমনি সুপারিশ করেছেন তেমনি গ্রাহকদের হিংসাত্মক কাজের জন্য নিন্দা ও প্রকাশ করেছেন ।
প্রথম আলোর এই সময় উপযোগী সিদ্ধান্তের জন্য লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে আমরা ও প্রথমআলো কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।
নিচে প্রথম আলোর সৌজন্যে সম্পাদকীয়টি আমাদের পাঠকদের জন্য হুবহুব তুলে ধরা হলো:
“লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের মানুষ আকস্মিকভাবে ক্ষোভে ফেটে পড়েনি, দিনে ১৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হজম করে তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। কিন্তু তাই বলে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে হামলা এবং সাতটি যানে আগুন দেওয়ার মতো নাশকতামূলক কাজও মেনে নেওয়া যায় না। প্রতিবাদের নামে এসব করা নিন্দনীয়।
একই সঙ্গে আমরা উদ্বিগ্ন যে পুলিশ এই ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করে কি না। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতারা যাতে পুলিশের দায়ের করা মামলার অপব্যবহার না ঘটাতে পারেন, সে বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে। পুলিশ বিদ্যুতের জন্য হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফ্রিস্টাইলে দুই মামলায় দুই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করেছে। যদিও এর অধিকাংশই অজ্ঞাতনামা। এ ধরনের কাল্পনিক আসামিদের পাইকারি এজাহারভুক্তিকরণের পুলিশি চর্চা সর্বক্ষেত্রে পরিহার করা উচিত।
আমরা আশা করব, প্রকৃত অনিষ্টকারী, যারা ঠান্ডা মাথায় সরকারি সম্পদের অনিষ্টসাধন করেছে, পুলিশ তাদের বিনা হয়রানিতে কেবল আইনের শর্ত পূরণের দাবিতে বিচারের মুখোমুখি করতে সচেষ্ট হবে। একই সঙ্গে এটাও তদন্তযোগ্য যে কেন বিদ্যুৎ অফিস অরক্ষিত রাখা হয়েছিল এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রশাসন এগিয়ে আসেনি! বিক্ষুব্ধ জনতাকে গুরুত্ব দেওয়ার এতটুকু দায় ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিত্বের দাবিদারেরা অনুভব করেননি। এরও জবাবদিহি দরকার।
রায়পুরের বিদ্যুৎবঞ্চিত মানুষ সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়। দুই বছর ধরেই তাঁরা বিদ্যুৎবঞ্চিত হয়ে ধীরে ধীরে ফুঁসে উঠছিলেন। এর আগের আন্দোলন শুধু রাস্তায় টায়ার পোড়ানোর মধ্যে সীমিত ছিল। জানা গেছে, সেখানে একটি সাবস্টেশন বসালে তা ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের স্থানীয় চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। এর টেন্ডার হয়েছে, এখন অনতিবিলম্বে কাজটা শেষ হোক। রায়পুর দেখাল, শহরে বিদ্যুৎ যে অপেক্ষাকৃত সাবলীল, তার মাশুল গুনছে গ্রামের মানুষ।”
0Share