বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়ে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে সাজিয়ে তুলতে শুরু করেছেন অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুর রহমান খান। তার নেতৃত্বে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এগিয়ে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছে খুলনাবাসী। এর আগে তিনি ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক এবং ইন্টারডিসিপ্লিনারি সেন্টার ফর ফুড সিকিউরিটি (আইসিএফ এর) পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ড. শহীদুর রহমানের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের পূর্ব বিঘা গ্রামে। তিনি মোঃ সিরাজুল ইসলাম খান ও মাতা হালিমা বেগম ছেলে।
২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ তাকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেন । তিনি ১৬ সেপ্টেম্বর তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য পদে যোগদান করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনার খালিশপুরে এক জনসভায় খুলনায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন ২০১১ সালের ৫ মার্চ। এর প্রায় ৪ বছর পর ২০১৫ সালের ৫ জুলাই জাতীয় সংসদে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যলয় বিলটি পাস হয়।
খুলনার দৌলতপুর কৃষি সম্প্রসারণ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অব্যবহৃত ৫০ একর জমিসহ ব্যক্তি মালিকানাধীন ৬২ একর জমি নিয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। পরবর্তীতে কৃষি সম্প্রসারণ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের জায়গায় খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রস্তাব অনুমোদন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাস্তবে রুপান্তরের দায়িত্ব পেয়েছেন লক্ষ্মীপুরের কৃতি সন্তান অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুর রহমান খান।
অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুর রহমান খানের জীবনী:
অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুর রহমান খান ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদ হতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৮৭ সালে এমএস ইন মাইক্রোবায়োলজি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৯৩ সালে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৯৯ সালে তিনি জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব লিপজেক থেকে পিএইচডি ও ২০০৩ সালে জাপান থেকে পোস্ট ডক্টরেট অর্জন করেন। ভেটেরিনারি বিজ্ঞানের উপর তার ৯২টি গবেষণামূলক প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি এ যাবৎ ১০৬ জনের অধিক ছাত্র-ছাত্রীর এমএস ও পিএইচডি ডিগ্রি তত্ত্বাবধান করেছেন।
তিনি দীর্ঘ ২৬ বছরের কর্মজীবনে শিক্ষকতা ও যুগোপযোগী গবেষণার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর, সহকারী প্রোক্টর, দুইবার মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের প্রধান, হল প্রভোষ্ট, সহকারী প্রভোস্ট, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে এফএও এর কনসালটেন্ট, সরকারের সিনিয়র রিজিওনাল ভ্যাক্সিন কনসালটেন্ট, বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ভেটেরিনারি এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (BSVER) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বাকৃবির মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শিক্ষক সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাকৃবি লোকাল চ্যাপ্টার এর সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নব নিযুক্ত এই উপাচার্য। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পেশাগত সংগঠনের কার্যক্রমের সাথে জড়িত।
দুই সন্তানের জনক ড. শহীদুর রহমানের স্ত্রী ড. ফেরদৌসী বেগম উপজেলা লাইভস্টক অফিসার হিসাবে কর্মরত।
0Share