দীর্ঘ দিন যাবত বাংলাদেশের উপকূলের জনজীবন, পরিবেশ-প্রকৃতি নিয়ে সংবাদ লিখে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু। পরিবেশ ও প্রকৃতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘উই ন্যাচালিষ্টস’ তাঁকেসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আটজন সাংবাদিককে এ পুরস্কারে ভূষিত করে। পরিবেশ ও প্রকৃতির বিভিন্ন শাখায় অবদান রাখার জন্য বিশ্বেরএ আট গুণী সাংবাদিককে এ বিরল সম্মানে ভূষিত করা হয়।
রফিকুল ইসলাম মন্টু এই অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ‘স্টোরিটেলিং’ ক্যাটাগরিতে। বাংলাদেশের উপকূলের জনজীবন, পরিবেশ-প্রকৃতি নিয়ে বর্তমানে তিনি বিশ্ব বিখ্যাত গণমাধ্যম বৃটেনের গার্ডিয়ান, থমসন রয়টারস ফাউন্ডেশন নিউজ, থার্ডপোল এবং আর্থজার্নালিজম নেটওয়ার্কে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে লিখে চলছেন।
পহেলা অক্টোবর ওয়ারলড পিপল অব ন্যাচার ডে ২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। অ্যওয়ার্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ প্রত্যেকে পাচ্ছেন ট্রফি, সনদ এবং পুরস্কারের অর্থ হিসেবে ১০০০ ইউএস ডলার। এগুলো অনুষ্ঠানের আগেই অ্যওয়ার্ডপ্রাপ্তদের কাছে সনদ এবং পুরস্কারের অর্থ ১০০০ ইউএস ডলার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বলে নিশ্চিত করেছেন সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু।
পরিবেশ ও প্রকৃতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘উই ন্যাচালিষ্টস’ প্রথমবারের মত পহেলা অক্টোবরকে ওয়ারলড পিপল অব ন্যাচার ডে ঘোষণা করে। দিবসটি উপলক্ষে প্রথমবারের মত সম্মানিত হলেন বিশ্বের এই আট ব্যক্তি। পহেলা অক্টোবর ওয়ারলড পিপল অব ন্যাচার ডে ২০২১’ উপলক্ষে বাংলাদেশী সময় রাত আটটায় ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। ওয়েবিনারের বিষয় ছিল ‘গ্রীণ চাইল্ডহুড’। এই ওয়েবিনারে প্যানেলিষ্ট হিসাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক অংশ নেন।
সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু:
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল নিয়ে সাংবাদিকতায় একটি ভিন্ন ধারা তৈরি করেছেন রফিকুল ইসলাম মন্টু। তার কাজের ক্ষেত্র সমগ্র উপকূলের ঝুঁকিতে থাকা ১৬ জেলা। জেলাগুলো হচ্ছে: কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, শরীয়তপুর, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা।
এইসব জেলার প্রান্তিক জনপদ ঘুরে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে উপকূল এলাকার মানুষের কণ্ঠ তুলে এনে খবর তৈরি করছেন। লিখছেন উপকূলের পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ, নাগরিক সেবা, জনজীবনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। তার কাজের মধ্যদিয়ে সর্ব মহলে পরিচিতি পেয়েছে ‘উপকূল সাংবাদিকতা’। নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকেরা উপকূল ভিত্তিক সাংবাদিকতায় উৎসাহী হয়ে উঠছেন।
দীর্ঘ সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশায় রফিকুল ইসলাম মন্টু। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, সমকাল, মানবজমিন, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর, দৈনিক সংবাদ, ভোরের কাগজ, বাংলাবাজার পত্রিকাসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কাজ করেছেন তিনি। তার সাংবাদিকতায় হাতেঘড়ি ১৯৮৪ সালে সাপ্তাহিক নবঅভিযান থেকে। এরআগে তিনি দেওয়াল পত্রিকার মাধ্যমে সংবাদ লেখার চর্চা করেছেন।
কাজের স্বীকৃতি হিসাবে রফিকুল ইসলাম মন্টু ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি বেস্ট রিপোর্টিং আওয়ার্ড পেয়েছেন তিনবার। ইউনিসেফ-মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনবার। পিআইবি-এটুআই মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন দু’বার। এছাড়াও পিআইবি-ইউনিসেফ ফিচার পুরস্কার, সরেজমিন প্রতিবেদনের জন্য চারণ সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিন স্মৃতি পুরস্কার, জনসংখ্যা বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য এফপিএবি পুরস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য বিসিডিজেসি-কানাডিয়ান অ্যাওয়ার্ড, দুর্যোগ বিষয়ক প্রতিবেদন লেখার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো’র অ্যাওয়ার্ডসহ প্রায় ২০টি পুরস্কার অর্জন করেন।
পুরস্কারপ্রাপ্ত সবগুলো প্রতিবেদন উপকূলীয় ইস্যু নিয়ে লেখা।
আরো জানতে:
পরিবেশ সাংবাদিকতায় আন্তর্জাতিক ফেলোশীপ পেলেন রফিকুল ইসলাম মন্টু
হৈমনরন্দ্রে স্মৃতি সম্মাননা পেয়েছেন উপকূল সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু
0Share