নিজস্ব প্রতিনিধি: অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর পর বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর ) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রামগতি উপজেলার চর রমিজ ও চর গাজী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এর আগে বুধবার সকালে সরকার পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দেয়া হাইকোর্ট বিভাগের স্থগিতাদেশ স্থগিত করার আদেশ দেন।
বুধবার বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সোহেল সামাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর ফলে চর রমিজ ও চর গাজী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনগত আর কোন বাঁধা নেই বলে জানান তিনি। সীমানা জটিলতার কারনে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় দীর্ঘ ১৮বছর পর চরগাজী ও চররমিজ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হচ্ছে।
রামগতি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটানিং অফিসার জাকির মাহমুদ জানান, চর রমিজে মোট ভোটার ২৩ হাজার ২০১, জন যাদের মধ্যে ১১ হাজার ৭৪৪ জন পুরুষ এবং ১১ হাজার ৪৫৭ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১০টি।
চর গাজীতে মোট ভোটার ২০ হাজার ২৮৪, জন যাদের মধ্যে ১০ হাজার ১৯৭ জন পুরুষ এবং ১০ হাজার ৮৭ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১১টি।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত ওই দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১১ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৮১ জন এবং সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য পদে ৩০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
রামগতি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটানিং অফিসার জাকির মাহমুদ জানান, চর রমিজ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫জন সাধারণ সদস্য পদে ৩৭ জন এবং সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য পদে ১৭ জন ।
চরগাজী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন সাধারণ সদস্য পদে ৪৪ জন এবং সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য পদে ১৩ জন|
কেন ১৮ বছর পর নির্বাচন:
রিটানিং অফিসার জাকির মাহমুদ জানান, ১৯৯৭ সালে ওই দুই ইউনিয়নে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল। নোয়াখালির সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ও চর জুবলী ইউনিয়নের সঙ্গে সীমানা বিরোধ সংক্রান্ত মামলার কারণে ২০০২ সালে নির্বাচন কমিশন সেখানে নির্বাচন স্থগিত রাখে।
পরে ২০১১ সালে নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হলে উচ্চ আদালতের নির্দেশে পুনরায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়। গত ২৭ আগস্ট নির্বাচন কমিশন ওই দুই ইউনিয়নে নির্বাচন করার জন্য প্রজ্ঞাপণ জারি করে। প্রজ্ঞাপণের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।
আ.লীগ ও বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ:
এ দিকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হামলার অভিযোগ করেছেন। এসব ঘটনায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। হাজিরহাট, টুমচর, চরলক্ষ্মী ও আজাদ বাজার এলাকার কয়েকজন ভোটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-সমর্থিত দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটছে।
উভয় প্রার্থীর পক্ষে বহিরাগত লোকজন এলাকায় মহড়া দিয়েছেন। সবশেষে তাদের পক্ষেই মূলত আদালতে স্থগিতাদেশ ও প্রত্যাহার আদেশ চাওয়া হয়েছে। এতে ভোটারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষে আইনশৃঙ্খলার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
0Share