একাদশ সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর, সদরের একাংশ) আসনে মহাজোটের প্রার্থী মোহাম্মদ নোমান নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ নিয়ে জনগণের উদ্দেশ্যে তার লেখা একটি চিঠি বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্থানীয়ভাবে ভাইরাল হয়ে গেছে। মোহাম্মদ নোমান এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ, জাতীয়পার্টিসহ ভোটারদের মধ্যে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর -২ আসনের মহাজোটের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ আলী খোকন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি থেকে নোমান কোন সহযোগিতা পায়নি। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শহিদ ইসলাম পাপুল থাকলেও সংকট নিরসনের উদ্যোগ নেয়নি তারা। এজন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে দেখা করে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে মোহাম্মদ নোমানের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
১৯ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত চিঠিতে মোহাম্মদ নোমান লিখেছেন, জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, লক্ষ্য নির্ধারণে অনিশ্চয়তা, কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয় ও সিদ্ধান্তহীনতা এবং মহাজোটের স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করে নির্বাচনে বহাল থাকায় তিনি নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়, মহাজোটের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংশয়, সন্দেহ, অবিশ্বাস ও বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া এবং লোভী সুযোগসন্ধানীদের অবৈধ গোপন তৎপরতা ও আঁতাত করা, কেন্দ্রীয় সহযোগিতা না পাওয়া ইত্যাদি কারণে আমি নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
মোহাম্মদ নোমান বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকার সর্বস্তরের জনগণ, যারা আমাকে অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতি সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। বাস্তবচিত্র অনুধাবন করে আমার সিদ্ধান্তকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
দলীয় সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যশী ছিলেন ১৮ প্রার্থী। পরে জোটগত কারণে মনোনয়ন দেওয়া দেওয়া হয় জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ নোমানকে। তখন প্রার্থীরা প্রত্যাহার করলেও কুয়েত প্রবাসী শহিদ ইসলাম পাপুল প্রত্যাহার করেনি। তিনিও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
নোমান দশম সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিএনপির ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচন করছেন আবুল খায়ের ভূঁইয়া। তিনি জেলা বিএনপির সভাপতি ও দুইবারের সাবেক এমপি। নোমান সরে দাড়ানোর কারণে আবুল খায়ের ভূঁইয়া আর শহিদ ইসলাম পাপুলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ভোটাররা আভাস দিচ্ছেন।
0Share