সাজ্জাদুর রহমান: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় স্থগিত আট ইউনিয়নের সম্মেলন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অভিযুক্ত কাউন্সিলরদের তালিকা সংশোধন ও সম্মেলন হবে কি হবে না বা কবে হবে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সম্মেলন ঘিরে উপজেলা নেতাদের দৃশ্যমান তৎপরতা না থাকায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল নেতাকর্মীরা অনিশ্চিয়তার মধ্যে থাকলেও জেলা-উপজেলার শীর্ষ নেতারা বলছেন ফেব্রুয়ারি মাসে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।
কমলনগরের নয়টি ইউনিয়ন সম্মেলন ঘিরে উপজেলায় জুড়ে ছিল উৎসব। চাঙ্গা হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের রাজনীতি। পোস্টার ব্যানারে ছেয়ে যায় প্রতিটি ইউনিয়ন ও হাট-বাজার। সম্মেলন স্থগিত হওয়ার পর ফের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ না হওয়ায় নেতাকর্মীরা ঝিমিয়ে পড়েছেন।
এদিকে, সুবিধাবাদী কিছু প্রার্থী পকেট কমিটি আনতে দৌঁড়ঝাপ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে তৃণমূল থেকে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের আওয়াজ উঠেছে। দ্রুত সঠিকভাবে কাউন্সিলরদের তালিকা করে ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন চান তারা। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে দলের উপজেলা সম্মেলন স্থগিত হয়।
দলীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন কাউন্সিলরদের তালিকায় স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের একাধিক অভিযোগ ওঠায় সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। কাউন্সিলরদের তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ এনে ফলকন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী হাজী হারুনুর রশিদসহ একাধিক প্রার্থী লিখিত অভিযোগ করেন।
সম্মেলন স্থগিত হওয়া ইউনিয়নগুলো হলো সাহেবেরহাট, লরেন্স, মার্টিন, ফলকন, পাটোয়ারির হাট, হাজিরহাট, চর কাদিরা ও তোরাবগঞ্জ।
হাজিরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী আক্তার হোসেন মিলন বলেন, অনিয়মের কারণে সম্মেলন স্থগিত হওয়ার পর ফের সম্মেলন করার কোনো প্রস্তুতি নেই। ভুয়া তালিকা সংশোধনের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। সম্মেলন হবে কি হবে না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এছাড়া ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও এ নিয়ে সন্দিহান।
তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ফয়সল আহমেদ রতন বলেন, পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কাউন্সিলরদের তালিকা তৈরি করা হয়। এতে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সম্মেলন স্থগিত হয়। এখন নেতাকর্মীদের জোর দাবি সঠিকভাবে কাউন্সিলদের তালিকা করে ভোটের মাধ্যমে সম্মেলন করা।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রাজু বলেন, কাউন্সিলরদের তালিকায় কিছু স্বজনপ্রীতি হয়েছে, তা সংশোধন করা হচ্ছে।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাস্টার বলেন, সম্মেলনের তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। সঠিক নেতৃত্ব গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, কমলনগরে স্থগিত হওয়া ইউনিয়নগুলোতে ফেব্রুয়ারি মাসে সম্মেলন করা হবে। যে সব কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তা যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ ডিসেম্বর কমলনগর উপজেলা দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। নির্ধারিত সময়ে চর কালকিনি ইউনিয়নের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও অন্য আটটি ইউনিয়নের সম্মেলন স্থগিত করা হয়।
0Share