বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে নির্বাচনের ডামাঢোল বাজতে শুরু করেছে।
দলের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বচ্ছ ইমেজ এবং দলের ত্যাগীদের নাম প্রস্তাব করতে হবে। যারা নির্বাচনে জিততে পারবে না, জনগণের সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা নেই এমন কারো নাম প্রস্তাব করা যাবে না।
জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে সারাদেশে আমাদের দলের ইমেজ নষ্ট হয়েছে। সামান্য কিছু টাকার জন্য মনোনয়ন বাণিজ্য করবেন না। এটি নেত্রী কোন ভাবেই মেনে নেবেন না। এ ব্যাপারে সবার বিষয়ে নজরদারি আছে। এনিয়ে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, নেত্রী ও দল কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অতীতে যারা দলের নির্দশনা অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন, যারা বিদ্রোহ করেছেন। তিনি বিজয়ী হোক অথবা পরাজিত হোক। সামনে দলের মনোনয়ন পাবেন না। নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন অথবা পরাজিত হয়েছেন তারা ফরম কিনে টাকা অপচয় করবেন না। কাউকে আমরা নমিনেশন দেবো না।
লক্ষ্মীপুরবাসীর কাছে শেখ হাসিনার পক্ষে কঠোর বার্তা হিসেবে নেতাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, দল করলে সবাইকে দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে। লক্ষ্মীপুরে দলকে অনেকবার বিতর্কিত হতে হয়েছে। বৃহত্তর নোয়াখালীতে সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত লক্ষ্মীপুরের কর্মীরা। শহরে নোঙরখানা খুলে দুঃসময়ে কর্মীদের আশ্রয় দিতে হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের কর্মীরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে, লক্ষ্মীপুরের কোথাও না কোথাও রক্ত ঝরেছে। আজকের এ সুদিন একদিন দুর্দিনেও রূপ নিতে পারে। দেশে কখন যে কি ঘটে, চোখের ফলকে কি ঘটে যায় তা কেউ জানে না। আমরা কেউ কি জানি ১৫ আগস্ট সংগঠিত হবে।
এর এক মুহুর্ত আগেও জানা সম্ভব ছিলো না এ ধরণের নৃশংস হত্যাকন্ডের কথা। এ কথা কেউ যেন ভুলে না যায়। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার প্রধান অতিথি হিসেবে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধান বক্তা হিসেবে আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, রাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি জামায়াতের লুটপাট আর দুর্নীতি ছাড়া কিছুই অর্জন ছিলো না। তারা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন চোখে দেখে না। তারাই সরকারে বিরোধীতা করে। নানান সময় নানান ইস্যু নিয়ে সরকারকে বিব্রত করতে চায়। বিএনপি জামায়াত বিভিন্ন আন্দোলনের কথা বলে দেশে ধংসাত্মক কার্যকলাপ চালিয়ে হাজার হাজার গাড়ি পুড়িয়েছে। মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের লক্ষ্য ছিল সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্ত করা। শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটানো। এ কন্টাকির্ণ পথ পাড়ি দিয়েই শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নত আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সরকারি বিরোধী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে এ বাংলাদেশকে আবার অস্থিতিশীল করতে চেয়েছে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি আবার নতুন করে চক্রান্ত শুরু করেছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে ভাস্কর্য বিরোধী যারা কথা বলছে, তারা হয় রাজাকার ছিল না হয় রাজাকার পরিবারের সন্তান তারা। একাত্তরে তারা পরাজিত হয়ে এবারও তারা পরাজিত হবে।
এদের জয়লাভের কোন সুযোগ নেই। এ অপশক্তিকে আমরা কঠোরভাবে দমন করবো। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন। আজ তারই ভাস্কর্যে নির্মাণের বিরোধীতা করা হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুরের মেয়াদহীন আওয়ামী লীগের সকল কমিটি নতুন করে গঠনের লক্ষ্যে আগামি তিন মাসের মধ্যে সম্মেলনের আয়োজন করার নির্দেশ দেন প্রধান বক্তা মাহবুব উল আলম হানিফ। লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের সঞ্চালনায় শহরের কুটুম বাড়ি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত বর্ধিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, যুব ও ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের এমপি ও সাবেক বিমানমন্ত্রী শাহজাহান কামাল, লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের এমপি আনোয়ার হোসেন খান।
0Share