লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকার লক্ষ্মীপুরের রায়পুর দালাল বাজার সংলগ্ন সড়কের পূর্বপাশে বিশাল আয়তনের এক দিঘী আছে। এর নাম খোয়াসাগর দিঘী। যার বিস্তৃতি প্রায় ২৫ একর (ষোল কানি ) ।
কুয়াশাকে লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় ভাষায় খোয়া বলা হয়। দিঘীর বিরাট দৈর্ঘ্য প্রস্থের ফলে এক প্রান্তে দাড়িয়ে অন্য প্রান্তে কুয়াশার মত মনে হত বলে এ দিঘীর নাম করণ করা হয় খোয়া সাগর দিঘী।
আনুমানিক ১৭৫৫ সালে দালালবাজারের জমিদার ব্রজ বল্লভ রায় মানুষের পানীয় জল সংরক্ষনে এ দিঘীটি খনন করেন। এই দীঘির ঠিক পাশেই রয়েছে দালাল বাজার মঠ।
এ দীঘির সাথে একটি রূপকথার গল্প জড়িয়ে আছে।
জানা যায় একবার এক বরযাত্রী তাদের নববধূকে নিয়ে দীঘির পাড় দিয়ে যাচ্ছিল। সে সময় বর যাত্রীদের পানির পিপাসা পেলে তারা যাত্রা বিরতি দিয়ে দিঘীতে নেমে পানি পান করে।
নববধূও নেমেছিল পানি পান করার জন্য। কিন্তু যখন নববধূটি অঞ্জলি ভরে পানি পান করতে যাচ্ছিল-অমনি তা পা দুটি ধরে কে যেন তাকে নিচের দিকে টেনে নিয়ে যায়। বধূটি আর ফিরে আসেনি।
সেই থেকে ঐ স্থানটিতে গভীর গর্ত হয়ে আছে। প্রচন্ড খরায় সারা দীঘি শুকিয়ে গেলেও ঐ স্থানটি শুকায় না।
খোয়া সাগরদিঘীর অল্প পশ্চিমে কোদাল ধোয়া দীঘি নামে একটি দিঘী আছে। কথিত আছে যে খোয়াসাগর দিঘীখনন করে শ্রমিকরা কোদাল ধুতে এসে দৈনিক এক কোপ মাটি কেটে ঐ দিঘী খনন করে।
দালাল বাজার জমিদার বাড়ী:
লক্ষ্মী নারায়ন বৈষ্ণব প্রায় ৪ শত বছর পূর্বে কলকাতা থেকে কাপড়ের ব্যবসা করতে দালাল বাজার আসেন। তার উত্তর পুরুষরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর বাণিজ্যিক এজেন্সী এবং পরে জমিদারী লাভ করেন।
বাণিজ্যিক এজেন্ট হওয়ায় স্থানীয়রা তাদেরকে মনে প্রাণে গ্রহণ করেনি। তাদের ‘দালাল’ বলে আখ্যায়িত করেন।
১৯৪৬ এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় জমিদারগণ পালিয়ে গেলে তাদের পরিত্যাক্ত জমিদার বাড়ীটি রয়ে যায়। এটি আজ সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংসের মুখে। প্রায় ৫ একরের এ জমিদার বাড়ীর সম্মুখের রাজগেট, রাজ প্রাসাদ, জমিদার প্রাসাদ, অন্দর মহল প্রাসাদ, বাড়ীর প্রাচীর, শান বাঁধানো ঘাট, নাট মন্দির, পুজা মন্ডপ, বিরাটাকারের লোহার সিন্দুক, কয়েক টন ওজনের লোহার ভীম প্রভৃতি দেখার জন্য দূর-দুরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে।
বিচার আসন ও নৃত্য আসন কে বা কারা সম্প্রতি নিয়ে গেছে।
0Share