রবিউল ইসলাম: লক্ষ্মীপুর জেলা তথ্য বাতায়নে তথ্যের ঘাটতি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সহজে তথ্য পেতে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন নামে চালু হওয়া ওয়েবসাইটের লক্ষীপুর অংশে ত্রুটিপূর্ণ তথ্য দেয়া আছে। এতে তথ্য প্রত্যাশীরা প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তিতে পড়ছেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার ২০১০ সালে শুরু থেকেই জাতীয় তথ্য বাতায়ন নামে একটি ওয়েব চালু করে। এ বছরের ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ কার্যালয়ে বসে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন নামের এই সাইটির উদ্বোধন করেন। ওয়েবটির সমন্বয় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্য এবং যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ওয়েব পোর্টালে গিয়ে দেখা গেছে, জেলা সম্পর্কিত জেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, সরকারী অফিস, অন্য প্রতিষ্ঠান ই-সেবা, ফটো গ্যালারীসহ ৯টি বিভাগ নিয়ে পাতাটি সাজানো হয়েছে। ৫ টি উপজেলার জন্য খোলা হয়েছে আলাদা ওয়েব পেজ। কিন্তু মূল বিভাগের দেয়া তথ্যের সঙ্গে ব্যাপক গড় মিল রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলায় কর্মরত না থাকলেও সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীদের তথ্য ছবি ও মোবাইলফোন নম্বর এখনো জেলা পোর্টালে রয়েছে। ৪ মাস আগে লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের সুপার মো. মজিবুর রহমান বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যান। অথচ তার নাম ছবি ও মোবাইলফোন নম্বর এখনো পোর্টালে। এ ছাড়া জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বদলী হয়ে হবিগঞ্জ অবস্থান করলেও তার নাম ছবি ও মোবাইলফোন সম্বর এখনো পেইজে রয়েছে। লক্ষ্মীপুর পরিষদ প্রশাসক পদ থেকে ৬ মাস আগে অব্যাহতি নিলেও এখনো তার সব তথ্যই রয়ে গেছে।
একইভাবে লক্ষ্মীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোতালেব বিশ্বাস বিগত এক বছর আগে বদলী হলেও তার মোবাইলফোন নম্বর এখনো লক্ষ্মীপুর নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে রয়েছে। লক্ষ্মীপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপ পরিচালক এবিএম মাসুদুল আলম ৪ মাস আগে অবসর নেন। অথচ তাকে এখনো উপ-পরিচালক হিসেবে পেইজে দেখানো হচ্ছে।
বিআরটিএ সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম হায়দার সরকার ৩ মাস আগে বদলী হয়ে ঢাকায় মিরপুর বিআরটিএ কার্যালয় যোগ দেন। অথচ তার নাম ছবি ও তথ্য জেলা ওয়েব পোর্টালে রয়েছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ ২ মাস আগে অবসর নেন। কিন্তু পোর্টালে এখনো সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে তার তথ্য রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ওসমান খান এক মাস আগে বদলী হলেও এখনো পোর্টালে নাম ছবি ও প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে।
এছাড়া জেলা মহিলা ক্রীড়া স্ংস্থার সভানেত্রী ও সহসভানেত্রী অন্যত্র চলে গেলেও তাদের নাম এখনো অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। শহরে সরকারী- বেসরকারী প্রায় ব্যাংকের মধ্যে সোনালী, পূবালী, ব্র্যাক, ইসলামী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও একাধিক বীমা প্রতিষ্ঠানের নাম ও অন্য তথ্য অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।
কমলনগরের উপজেলা চেয়ারম্যানের পরিচিতি অন্তরভুক্ত করা হয়নি। কমলনগরের অধিকাংশ চেয়ারম্যানের ইমেইল ঠিকানা হিসাবে akash_das58@yahoo.com ইমেইলটি
ব্যবহৃত হচ্ছে।
স্থানীয় পত্রিকার তথ্যাদি থাকলেও লক্ষ্মীপুরে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের নাম ও তথ্য নেই।
লক্ষ্মীপুর বালিকা বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জেলা ওয়েব পোর্টাল প্রয়োজনীয় তথ্য ও হালনাগাদ থাকা দরকার। তা না হলে অনলাইনে জেলার মানুষ প্রয়োজনীয় সেবা নিতে পারবে না।
সাংবাদিক তহিদুর রহমান বলেন, ‘সরকার এটুআই প্রকল্প থেকে পোর্টাল পরিচালকদের প্রশিক্ষণ নামে হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে। অথচ এর সুফল লক্ষ্মীপুরবাসী এখনো পাচ্ছেনা।’
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আইসিটি শাখা মোকতাদিরুল আহমেদ জানান, পোর্টাল আপডেট করা সম্ভব হয়নি। এটি একটি ব্যাপক কাজ, আগামী ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে তথ্য হালনাগাদ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।



0Share