মানব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মাছেরা। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মৎস্য বিজ্ঞানীরা। ভারতের সবকটি রাজ্যেই এই প্রবণতা দেখা গিয়েছে বলে সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট সূত্রে এ খবর দিয়েছে ভারতীয় পত্রিকা দৈনিক বর্তমান। মানব রোগ আক্রান্ত মাছেদের চিকিৎসা কিভাবে করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা চলছে।
সবকটি রাজ্যের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক করে এর সমাধান সূত্র বের করতে চান মৎস্য বিজ্ঞানীরা। রোগাক্রান্ত মাছ খেতেও নিষেধ করছেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা। মানুষের বিভিন্ন রোগ এবার দেখা যাচ্ছে মাছেদের দেহে। জানা গিয়েছে, গঙ্গা বা অন্যান্য নদীতে হাসপাতালের নোংরা জল এসে পড়ছে।
এর জেরে নদীর জল দূষিত হয়ে পড়ছে। হাসপাতাল থেকে আসা জলে থাকছে নানান রোগের ওষুধও। ওই জলের মধ্যে থেকে মাছেরা শ্বাস নিচ্ছে এবং ওই জলের মধ্যেই থাকছে তারা। এর ফলে মানব রোগ বাসা বাঁধছে মাছেদের দেহে। সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারি রিসার্চ ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গিয়েছে, মাছেদের যে ধরনের রোগ হয়, তার চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে।
প্রতিটি রোগের ওষধ রয়েছে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হল, মানব রোগ আক্রান্ত মাছগুলির চিকিৎসা করতে গিয়ে গ্রামীণ এলাকায় মৎস্য চিকিৎসকরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষের জন্য যেসব ওষধ ব্যবহার করা হয়, সেই ওষুধই ব্যবহার করছেন। কিন্তু তাতে রোগ সারার কথা নয়। সারছেও না। ফলে রোগাক্রান্ত মাছগুলি অসুস্থ অবস্থায় থেকে যাচ্ছে। ওই রোগাক্রান্ত মাছই আসছে বাজারে। ওই মাছ ক্রেতারা বাড়িতে নিয়ে খাচ্ছেনও। ওই সব রোগাক্রান্ত মাছ খেতে নিষেধ করছেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা।
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারতের প্রতিটি রাজ্যেই মানব রোগ দেখা যাচ্ছে মাছেদের মধ্যে। দেশের সব নদীতেই হাসপাতালের বর্জ্য পদার্থ মেশে। হাসপাতালের নোংরা জল এসে পড়ে নদীতে। আর তাতেই দূষিত হয়ে পড়ছে প্রতিটি নদীর জল। সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক কর্তা বলেন, মানব রোগ আক্রান্ত মাছেদের কীভাবে চিকিৎসা করা যায়, বা রোগের সংক্রমণ যাতে না ঘটে, তার জন্য আগে থেকে কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়, তার গবেষণা চলছে। প্রতিটি রাজ্যের মৎস্য বিশেষজ্ঞদের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক করা হবে। এবং ওই বৈঠকে সমাধান সূত্রে বের করা হবে।
বারাকপুরের সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারি রিসার্চ ইনস্টিউটটের প্রধান মৎস্য বিজ্ঞানী ডাঃ রতনকুমার মান্না বলেন, মাছেদের রোগ নিরাময়ের জন্য ওষুধ সকলেই জানেন। কিন্তু এখন যা উদ্বেগের তা হল, মানব রোগ মাছেদের মধ্যে হচ্ছে। এর কারণ হাসপাতালের নোংরা জল এসে পড়ছে নদীতে। সেই জল দূষিত করছে নদীর জলকে। মানব রোগ যাতে মাছেদের না হয়, তার জন্য কী কী প্রতিষেধক নেওয়া যায়, সে সংক্রান্ত গবেষণা চলছে। ওই সব রোগের নিরাময়ের জন্যও গবেষণা চলছে। একই সঙ্গে জনসচেতনতাও ভীষণ জরুরি।
0Share