কুয়েতে মানব পাচার ও অর্থ পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) শহীদ ইসলাম। শনিবার (৬ জুন) কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। লক্ষ্মীপুরে তিনি কাজী পাপুল নামে পরিচিত।
শনিবার (৬ জুন) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টায় কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বলে কুয়েতের বাংলাদেশি কমিউনিটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এছাড়া কুয়েতের বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুখাই আলী জানান, সংসদ সদস্য (এমপি) শহীদ ইসলামকে কুয়েতের নং -৪ নম্বর ব্লকের মুশরাফ এলাকায় তার নিজস্ব বাসভবন (একটি ভাড়া ভিলা) থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রবিবার কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম ঢাকার জাতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “সিআইডি তাকে (কাজী পাপুল) গ্রেফতার করেছে বলে সকাল বেলা জানতে পেরেছি। তবে, আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের এ ব্যাপারে এখনও কিছু জানানো হয়নি।”
বিষয়টি অস্বীকার করে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বলেন, “একটি গোষ্ঠী গুজব ছড়াচ্ছে।”
কুয়েতের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দেশটিতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর মানব পাচার ও অর্থ পাচারের অভিযোগে ১০০ জনেরও বেশি ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করেছে সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ। বাংলাদেশের এমপি কাজী পাপলুর নামও এই তালিকায় ছিল। কুয়েতে বিরাট ব্যবসা রয়েছে তার। মার্চ মাসের শেষ দিক থেকে কুয়েতেই অবস্থান করছেন তিনি।
এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে কুয়েতে মানব পাচারের সঙ্গে এমপি শহীদ ইসলাম পাপলুর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
কুয়েতের একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির নিরাপত্তা বিভাগ বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যকে খুঁজছে যার অবৈধ ভিসার ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তার কোম্পানি যাতে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পায় সেজন্য বাংলাদেশের ওই সংসদ সদস্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ঘুষ হিসেবে ৫টি বিলাসবহুল গাড়ি উপহার দিয়েছেন।
এদিকে কুয়েতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে দেশটির দৈনিক পত্রিকা আল-কাবাস জানিয়েছে, অর্থ পাচার ও মানব পাচারের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্রেফতার ওই ব্যক্তি ৩ জনের একটি গ্যাংয়ের সদস্য। গ্যাংয়ের অন্য দুই সদস্য আগে থেকে বিপদ আচ করতে পেরে দেশ থেকে পালিয়েছেন।
আল কাবাস আরও জানায়, এই ৩ ব্যক্তি দেশটির বড় বড় ৩টি কোম্পানির অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তাদের মাধ্যমে ২০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক কুয়েতে গেছেন। বিনিময়ে ৫ কোটি দিনারেরও বেশি আদায় করেছেন তারা।
0Share