নিজাম উদ্দিন | বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, আমরা আজকে শুনেছি, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন, পত্র-পত্রিকায় এসেছে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে ওনার সাক্ষাৎ হতে পারে। এটা খুশির সংবাদ। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য এ ধরনের বৈঠক হয়- স্বাভাবিক কারণে আমরা জনগণ উপকৃত হব। বাংলাদেশ উপকৃত হবে।

সোমবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

এ্যানি বলেন, আমরা যে লড়াই করেছি ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে, আমরা সবাই মিলে যেভাবে ঐক্যের জায়গায় এসেছি, আমরা যেভাবে সকল রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করে একত্রিতভাবে ঐক্য স্থাপন করেছিলাম, সেটা শক্তিশালী হবে। একটা সুদৃঢ় ঐক্য বাংলাদেশ এই মুহূর্তে প্রয়োজন। সেজন্য এ বৈঠকটি যদি হয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের ভীতকে শক্তিশালী করতে গেলে সুদৃঢ় ঐক্যটা খুব বেশি প্রয়োজন। কারণ সামনে একটা নির্বাচন, এই নির্বাচনটা যাতে সুন্দর ভাবে না হতে পারে সেজন্য ফ্যাসিস্টরা বসে আছে। ফ্যাসিস্টকে যারা গাইড করে পার্শ্ববর্তী দেশ তারাও কিন্তু বসে নেই। ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই আমাকে আপনাকে সজাগ থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। আমরা বহু কষ্টে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি।

এ্যানি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ রাতের অন্ধকারে ভোট করেছে, আমাদেরকে গ্রেপ্তার করে ভোট করেছে। কিন্তু জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারেনি। আজকে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান জনগণের মনে স্থান করে নিয়েছে। রাজনীতি দিয়ে মানুষের মনকে জয় করে নিয়েছে। এজন্য বিএনপিকে বলা হয় গণমানুষের দল। সাধারণ মানুষের দল। এ বিএনপিকে নিয়ে আমরা বড়াই করি, গর্ব করি। এ বিএনপি সৃষ্টি করেছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। আজকে তারেক রহমান বাংলাদেশে নাই। ৫ তারিখের পরের তারেক রহমান আর ৫ তারিখের আগে তারেক রহমানের মধ্যে পার্থক্য আছে। ৫ তারিখের আগে তারেক রহমান অত্যাচারিত ছিল, নির্যাতিত ছিল। আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন। আর ৫ তারিখের পর তারেক রহমান দেশ গড়ার কাজে আছেন। ১০০ দিন, ১৮০ দিন, ৩৬৫ দিন, বিভিন্ন প্লান করে নিয়েছেন।

বলেন, আগামী দিনের দেশে যখন একটা নির্বাচন হবে অভিজ্ঞতা সম্পদ এবং দায়িত্বশীল দল হিসেবে আমরা বলতে পারি আগামীদিনে এ দেশে যে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে, এ সরকারের নেতৃত্ব দিবে তারেক রহমান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। তারেক রহমানের উপর মানুষ ভর করতেছে, তারেক রহমানের উপর মানুষ আস্থা রাখতেছে।

এ্যানি বলেন, একটা নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি, প্রত্যাশা জায়গা থেকে দাবী এত বেশি সরকারের কাছে, আমরা মনে করছি এপ্রিল মাসে ভোট হলে রোজার মধ্যে, আমাদের প্রচারণা আসলে হয়না, তখন পরীক্ষা, তখন ঝড়-তুফান। আমরা আশা করছিলাম সরকারের কাছে রোজার আগেই ভোটটা হয়ে যাক। এটা বিবেচনার দাবি রাখে, সরকারের চিন্তা করা উচিত।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের আদর্শকে ধারণ করেই আমরা চলছি। তাই মানুষ এই পরিবারটাকে এমন ভাবে গ্রহণ করেছে, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে অন্য কোন পরিবার এদেশের জন্য এত দরদ নিয়ে এত ভালোবাসা নিয়ে জনগণের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করে নাই। বরং উল্টোটা করেছে, উল্টোটা করেছ বলেই স্বাধীনতার পর রক্ষী বাহিনীর অত্যাচারের কথা মনে আছে। ৭২, ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ এ দুর্ভিক্ষের কথা, দুঃশাসনের কথা, ১৭ বছর অত্যাচার-নির্যাতনের কথা, ফ্যাসিস্ট হাসিনা কিভাবে এ দেশ শাসন করেছিল, কিভাবে ভোট করেছিল। ভোট দিতে দেয় নি, ভোটার করেনি, ভোটের ব্যবস্থা করেনি। জোর করে ক্ষমতায় ছিল।
আজকের ফ্যাসিস্ট পালিয়ে গিয়েছে, কিন্তু ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন সাবু, সদস্য এড. হাফিজুর রহমান, সদর উপজেলা (পূর্ব) বিএনপির আহবায়ক মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, সদস্য সচিব মোখলেসুর রহমান হারুন, জেলা ওলামা দলের আহবায়ক শাহ মোহাম্মদ এমরান, জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন।

সদর উপজেলা (পূর্ব) বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মোহাম্মদ এমরান ও সদর উপজেলা (পূর্ব) যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল আদনানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সাইফ উদ্দিন খালেদ, সদর উপজেলা (পূর্ব) ছাত্রদলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বাবু, সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ।

পরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক এসএম আজাদ।