সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর শুক্রবার , ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৮ জানুয়ারি ‘তথ্য সুরক্ষা দিবস’

২৮ জানুয়ারি ‘তথ্য সুরক্ষা দিবস’

0
Share

২৮ জানুয়ারি ‘তথ্য সুরক্ষা দিবস’

২৮ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালিত হতে যাচ্ছে ডাটা প্রাইভেসি ডে বা তথ্য সুরক্ষা দিবস। প্রতি বছর এই দিবস উপলক্ষে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে বিশ্বে নানান রকম ক্যাম্পেইন চালানো হয়। ২০২১ সালের জন্য বাংলাদেশে দিবসটির থিম নির্ধারণ করা হয়েছে “আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের নিয়ন্ত্রণ করুন, গ্রাহকের তথ্য সুরক্ষায় যত্নবান হোন”।। ১৯৮১ সালে ইউরোপের বৃহৎ সংগঠন ‘কাউন্সিল অব ইউরোপে’ কনভেনশন ১০৮ স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে বিশ্বে প্রথম ডাটা প্রাইভেসি ডে বা তথ্য সুরক্ষা দিবস উদযাপন শুরু হয়।

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যালায়েন্সের (এনসিএসএ) নেতৃত্বে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক এই ক্যাম্পেইনের অফিসিয়াল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশে সাইবার সচেতনতা নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন। সংগঠনটি ‘ডাটা প্রাইভেসি ডে ২০১৮ চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে স্বাক্ষর করে দিবসটির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলো। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা সচেতনতায় বিশ্বব্যাপী সংগঠনগুলো যৌথভাবে যে দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেয়- চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন সেই মূলনীতিকে স্বীকার করেছে এবং তাতে সমর্থন জানিয়েছে।

এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের চ্যাপ্টারগুলোতে নানা কর্মসূচি নিচ্ছেন চ্যাম্পিয়ন (সাইবার সচেতনতাকর্মী) সদস্যরা।

সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের আহবাহক কাজী মুস্তাফিজ বলেন, অপরাধ ও সাইবার নিরাপত্তার সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজেকে সাইবার অপরাধের শিকার হওয়া থেকে রক্ষার জন্য তার ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, বরং এর জন্য সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। এ বিষয়ে সচেতনতা কর্মসূচি নিতে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের প্রতি তিনি আহবান জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যালায়েন্সের (এনসিএসএ) নির্বাহী পরিচালক মাইকেল কাইজার বলেন, “ইন্টারনেট অব থিংসের (আইওটি) মতো প্রযুক্তিগত অগ্রসরতার আগামী প্রজন্মের জ্বালানি হলো আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং আমাদের অভ্যাস ও আগ্রহ। আইওটি বলতে আমাদের বাসাবাড়ি, স্কুল ও কর্মক্ষেত্র- সব জিনিসেই ইন্টারনেট ডিভাইসের সংযোগ থাকাকে বোঝায়। তাই কিভাবে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা করা যায় ভোক্তাদের তা অবশ্যই শিখতে হবে। পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে যে, ভোক্তাদের ব্যক্তিগত তথ্য লেনদেনের পদ্ধতি ও তথ্য সুরক্ষা সম্পর্কে তারা স্বচ্ছ।”

মাইকেল কাইজার বলেন, “ভবিষ্যতে সংযুক্ত প্রযুক্তির (ইন্টারনেট অব থিংস-আইওটি) মাধ্যমে আমাদের জীবনযাপনের বিকাশ ঘটানোর অসাধারণ সুযোগ মিলবে। কিন্তু আমরা কেবল তখনই একটি অধিক নিরাপদ ও আস্থাশীল ইন্টারনেট ব্যবস্থা তৈরি করতে পারব যদি আমরা প্রত্যেকেই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই এবং ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষায় পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করি।’’

ডাটা প্রাইভেসি ডে বা তথ্য সুরক্ষা দিবস কী
১৯৮১ সালে ইউরোপের বৃহৎ সংগঠন ‘কাউন্সিল অব ইউরোপে’ কনভেনশন ১০৮ স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে বিশ্বে প্রথম ডাটা প্রাইভেসি ডে বা তথ্য সুরক্ষা দিবস উদযাপন শুরু হয়। ‘কনভেনশন ১০৮’ গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা নিয়ে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি যা প্রতিপালনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ২৮ জানুয়ারি ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যালায়েন্স (এনসিএসএ) এর নেতৃত্বে দিবসটি পালিত হয়। ইউরোপে উদযাপন শুরু হওয়া তথ্য সুরক্ষা দিবস ২০০৮ সাল থেকে উত্তর আমেরিকায় পালন শুরু হয়। এই দিবসটি মূলত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভোক্তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার সর্বোত্তম কলাকৌশল ভাগাভাগি করার সুযোগ করে দেয়।

‘ডাটা প্রাইভেসি ডে’ বা তথ্য সুরক্ষা দিবস বিশ্বব্যাপী একটি বৃহত্তর ক্যাম্পেইনের অংশ, যেখানে প্রাইভেসির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হয়। তুলে ধরা হয় ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার সহজ সব পদ্ধতি। পাশাপাশি সংগঠনগুলোকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় যে, সব কাজে প্রাইভেসি গুরুত্বপূর্ণ। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, করপোরেশন, সরকারি প্রতিষ্ঠান, পৌরসভা ও ব্যক্তি পর্যায়ে বাসাবাড়ি ও কর্মস্থলে সচেতনতা তৈরির ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক এই ক্যাম্পেইনে যুক্ত হয়েছে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন। সকল ‘ডাটা প্রাইভেসি ডে চ্যাম্পিয়ন’ই সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাইভেসি ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা সম্পর্কে সামঞ্জস্যপূর্ণ বার্তা প্রচার করে। এর মধ্য দিয়ে তথ্য সুরক্ষা ও আস্থা প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সচেতনতা বিকাশের সাধারণ লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে সংগঠনগুলো।

কেন আমাদের অনলাইন প্রাইভেসি সম্পর্কে সতর্ক হওয়া উচিত?
আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অবিরাম তথ্য প্রবাহ তৈরি করছি। সরকারি হিসাবে বর্তমানে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭ (সাত) কোটির বেশি। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় তিন কোটি, যা ২০২০ সাল নাগাদ পাঁচ কোটিতে দাঁড়াবে। আজকে আমরা আমাদের জীবনের বেশিরভাগ সময় ইন্টারনেট ও আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা ডিভাইসগুলোতে ব্যয় করছি। এখনও খুব কম মানুষই জানে যে, আমাদের ব্যবহৃত ডিভাইস ও অনলাইন সেবা থেকে অসংখ্য ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং তা শেয়ার করা হচ্ছে। এসব তথ্য অনির্দিষ্টভাবে গচ্ছিত করা হতে পারে এবং আমাদের ব্যক্তিগত এসব তথ্য উপকারে ব্যবহার করা হতে পারে আবার অবাঞ্চিতভাবেও ব্যবহার করা হতে পারে। এমনকি দেখা গেছে, অনলাইনে অনুপকারী তথ্য শেয়ার করার ফলেও তা আপনার আর্থসামাজিক অবস্থান সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করতে ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন আপনার প্রিয় রেস্টুরেন্ট অথবা অনলাইনে যেসব আইটেম আপনি ক্রয় করেছেন তা শেয়ার করা।

আইনগত বিষয়
শক্তিশালী আইনের অনুপস্থিতিতে দেশি-বিদেশি অনেক কোম্পানি তাদের ইউজার ও ক্রেতাদের ব্যক্তিগত আচরণ পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পাচ্ছে এবং ভোক্তাদের এসব তথ্য তারা লাভের জন্য বিক্রি করে দিচ্ছে। ভোক্তাদের বোঝা প্রয়োজন যে তাদের তথ্যের সঠিক মূল্য আসলে কতটা এবং কিভাবে এই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তা শেয়ার করা হচ্ছে। এছাড়া তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা জানতে হবে।

বাংলাদেশ সংবিধানের ৪৩ (খ) নম্বর অনুচ্ছেদে প্রাইভেসি রাইটস বা ব্যক্তির তথ্য সুরক্ষা ও গোপনীয়তা মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত। একইসঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় অনুমতি ছাড়া কারো ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণা (অনুচ্ছেদ ১২) নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সনদ (অনুচ্ছেদ ১৭), জাতিসংঘের কনভেনশন অন মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স (অনুচ্ছেদ ১৪) এবং শিশু অধিকার সনদ (অনুচ্ছেদ ১৬)-এ প্রাইভেসিকে অধিকার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের কোনো আইনে নাগরিকের তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনাই নেই। এখন সময় এসেছে তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের।

সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দ্বারা ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্রচার ও প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে ব্যক্তির সর্বাধিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কিভাবে বজায় থাকবে তা নিশ্চিত করতে হবে।

বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো চরম নৈতিক অপরাধকে প্রতিহত করার জন্য আইনি ব্যবস্থা থাকা জরুরি। কেউ ইচ্ছা করলেই যাতে আরেক নাগরিকের অধিকার ক্ষুন্ন করতে না পারে সেজন্য শক্ত আইন থাকা উচিত। আইন ব্যক্তির পক্ষে তার অধিকার সংরক্ষণে দায়িত্ব পালন করে। এর সঙ্গে সঙ্গে আইন মেনে চলার জন্য জনসচেতনতাও প্রয়োজন। শুধু আইন দিয়ে এই অপকর্ম বন্ধ করা যাবে না। মানুষ নৈতিক মূল্যবোধের বিষয়ে সজাগ হলে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো চরম নৈতিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

প্রাইভেসি ও সিকিউরিটির মধ্যে পার্থক্য কী?
সিকিউরিটি বলতে- যেসব উপায়ে আমরা আমাদের নিজেদের, আমাদের সম্পত্তি ও ব্যক্তিগত তথ্যকে সুরক্ষা করি তাকে বোঝায়। এটা অবাঞ্চিত অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে প্রথম পর্যায়ের প্রতিরক্ষা। আর প্রাইভেসি বলতে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে বোঝায়।

বাংলাদেশ | বিশ্ব আরও সংবাদ

যুদ্ধের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় ব্যবহার করা হলে বিশ্ব রক্ষা পেত: প্রধানমন্ত্রী

শিল্প ও সংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হলেন মোহাম্মদ এ আরাফাত

লক্ষ্মীপুরের ৪টি আসনের ৪৭৭ ভোট কেন্দ্রে পৌঁছেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম

কলকাতায় শুরু হচ্ছে ‘ইন্দো-বাংলা নোয়াখালী উৎসব’

তানভীর আলাদিনকে প্রধান সমন্বয়কারী করে ফেনী থিয়েটারের কমিটি গঠন

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশনার নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত, তারিখ: 9/12/2015  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2024
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Ratan Plaza(3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com