ঢাকা, ০৯ নভেম্বর ২০১৯: জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হল এ ’কোষ্টাল জর্নালিজম নেটওয়ার্ক’ এর উদ্দ্যোগে এবং ’চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ’ এর সার্বিক সহযোগীতায় ”১২ নভেম্বরকে ’উপকূল দিবস’ হিসাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে” একটি গোল টেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আগামী ১২ নভেম্বর ঢাকাসহ উপকূলের ১৬ জেলার ৫৫ স্থানে তৃতীয়বারের মত ‘উপকূল দিবস’ পালিত হবে। এই আলোচনা আনুষ্ঠানে ”উপকূলীয় জনগোষ্ঠী ও সম্পদের সুরক্ষায় চাই ১২ নভেম্বর উপকূল দিবসের স্বীকৃতি” শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রফিকুল ইসলাম মন্টু, উপকূল সন্ধানী সাংবাদিক ও উপকূল দিবস বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী। উক্ত অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ত্ব করেন এ এইচ এম নোমান এবং প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ।
এই আলোচনা অনুষ্ঠানে উপকূল অঞ্চলের সার্বিক চিত্র তুলে ধরা হয় এই আলোচনা অনুষ্ঠানে আরোও উপস্থিত ছিলেন, মেজর (অবঃ) আবদুল মান্নান, সংসদ সদস্য, লক্ষ্মীপুর-৪ শাহাজাদা সাজু, সংসদ সদস্য, পটুয়াখালী-৩ প্রফেসর এমিরেটাস ড. আইনুন নিশাত, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ইকতেদার আহমেদ, সংবিধান বিশ্লেষক, ম. ইনামুল হক, চেয়ারম্যান, জল পরিবেশ ইনষ্টিটিউট , প্রফেসর আব্দুল লতিফ মাসুম, প্রাক্তন ভিসি, পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়, গওহার নঈম ওয়ারা, উন্নয়ন বিশ্লেষক সহ প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ।
অনুষ্ঠানের মূল আলোচক আইনুন নিশাত বলেন,
৭০ এর ঘূর্ণিঝড়ের কথা দিয়ে শুরু করেন যার ভয়াবহতা এখনও সবার দুঃসহ স্মৃতি হয়ে আছে। তখনও ঢাকার মানুষজন শুরুতে বুঝতে পারেনি, যতক্ষণ না পর্যন্ত বেগম সুফিয়া কামাল ‘কাঁদো বাঙালি কাঁদো’ বলে সবাইকে জানানোর চেষ্টা করেন। উপকূল দিবস ও এভাবে মানুষকে সচেতন করে তুলতে পারে। তবে নামসর্বস্ব দিবসের কোন ফলাফল আসবে না। এর জন্য এজেন্ডা ভিত্তিক বাৎসরিকভাবে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। তিনি উদাহরণ হিসেবে বিশ্ব নদী দিবসের কথা বলেনা যা কানাডার এক স্কুল শিক্ষক শুরু করেন, তা এখন কোন স্বীকৃতি ছাড়াও সারা বিশ্বে পালন হয়। এরজন্য কিছু বাস্তবিক এজেন্ডার উদাহরণও দেন।
বর্তমান সরকার উপকূলে যে সামাজিক বনায়ন করে থাকে তা আবার ২০ বছর পরে কেটে কমিউনিটির মধ্যে দেওয়া হয়, কিন্তু যা সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এর সাথে যায় না। সরকার এর এই নীতি পরিবর্তন করতে পারলে আন্তরজাতিক সম্প্রদায় থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন পাওয়া সম্ভব।
ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পগুলোর সাথেও নীতি নিরধারনেরর সমস্যা রয়েছে। বর্তমানে উপকূলে যেই স্লুইসগেট আছে তার ডিজাইন হয়েছে ১৯৭০ এর এপ্রিলে যা এখনকার উপযোগী নয়। এই স্লুইসগেট বা জলকপাট পরিচালনা করার মত কেউ নেই।
সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্ল্যনমাফিক করা হয় না, যার একটি কারণ হল সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের অদক্ষতা। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে যেই ‘কিল্লা’ কেন্দ্রিক প্লান করেছেন তা অনুসরণ করা হলেও অনেক দক্ষভাবে এই শেল্টারগুলো তৈরি করা সম্ভব।
বাংলাদেশের সাইক্লোন ওয়ারনিং ও সেকেল যা প্রণীত হয়েছে ব্রিটিশদের দ্বারা, বর্তমানের প্রেক্ষাপটে এটা সাধারণ মানুষের বোঝার উপযোগী নয়। আন্তর্জাতিক ষ্ট্যাণ্ডার্ড এর সাথে গ্রহণযোগ্য নতুন ওয়ারনিং সিস্টেম প্রয়োজন।
ক্লাইমেট চেঞ্জ এর কারনে উপকূলে দুর্যোগের অবস্থা আরও গুরুতর হবে। আশেপাশের দেশগুলোতেও যেভাবে দুর্যোগ আঘাত হানছে তা প্রতিহত করার বাংলাদেশের জন্য কষ্টসাধ্য হবে।
এসকল বিষয় এজেন্ডা ভিত্তিক যদি উপকূল দিবসের সাথে সংযুক্ত করা যায় তাহলেই দিবস পালন করা যৌক্তিক হবে বলে বক্তব্য শেষ করেন আইনুন নিশাত।
চেঞ্জ ইনিশয়েটিভ জাকির হোসেন খান বলেন,
ম্যানগ্রোভ না থাকলে ক্ষতির পরিমান ট্রিলিয়ন ডলারে গিয়ে পৌছতে পারতো।
রফিকুল ইসলাম মন্টূ বাংলাদেশের সমগ্র উপকূলকে তিনটি ভাগ করে আলোচনা করেন। এদের বিভিন্নতার উপরে আলোকপাত করেন।
ম. এনামুল হক বলেন,
উপকূলের নদী ভাঙ্গন জোয়ার ভাটার কারনে সারাবছরই থাকে।
আবদুল লতিফ মাসুদ বলেন,
তিনি ১২ই নভেম্বরের প্রেক্ষাপটে তৎকালীন পুর্বদেশে ” ওরা আসে নি ” শিরোনামের সংবাদকে স্মরণ করেন।
গওহর নইম ওয়ারা বলেন,
আবাসন প্রকল্পে দরিদ্রদের কোন খবর থাকে না। তারা থাকে খাস জমিতে। আর খাস জমিতে তো আর আবাসন করা যায় না
আমিনুর রসুল, কাজের সমন্বয়ের উপরে গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ইকতেদার আহমেদ, দুর্নীতির প্রতি সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেন
এস এম শাহাজাদা বলেন,
চাইলেও খাস জমির অধিবাসিদেরকে নিরাপরাধ জায়গায় নেয়া যায় না। কারন তাদের ভয় থাকে স্থান ছেড়ে গেলে হয়তো তারা আর ডুকতে পারবে না।
মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান,
তিনি পশ্চিম পাকিস্তানীদেরকে পূর্ব পাকিস্তানীদের প্রতি দুর্যোগ প্রসঙ্গে বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গীর উপরে গুরুত্বায়ন করেন এবং সরকারের মেগা প্রকল্পের প্রতি গুরুত্বায়ন করেন।
0Share