১৯৭০সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় “ভোলা সাইক্লোন” স্মরণে লক্ষ্মীপুরে পালিত হয়েছে উপকূল দিবস। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার, (১২নভেম্বর) সকালে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে র্যালী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মাইন উদ্দিন পাঠান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শহীদ উদ্দিন।
আলোকযাত্রা কোস্টাল ইয়ুথ নেটওয়ার্ক-লক্ষ্মীপুর টিমের আয়োজনে কর্মসূচির শুরুতে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কলেজের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিয়ে র্যালীটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। র্যালী শেষে কলেজে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে বক্তারা উপকূল দিবসকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানান।
আলোকযাত্রা কোস্টাল ইয়ুথ নেটওয়ার্ক-লক্ষ্মীপুর টিমের টিম লিডার, তরুণ সংবাদকর্মী জুনাইদ আল হাবিবের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সামাজিক নন্দন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা রাজু আহমেদ, কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক, পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, কলেজ গ্রন্থাগারিক সাজ্জাদুর রহমান, কর্মকর্তা শাহেদ হোসেন, ছাত্রনেতা জিয়াদ হোসেন রাব্বীসহ কলেজের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী ও কর্মচারীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, পৃথিবীর সভ্যতা সৃষ্টিলগ্নে উপকূলের ভূমিকার কথা আমরা কোনভাবেই অস্বীকার করতে পারবো না। কোথাও সাগরের, কোথাও নদ-নদী, কোথাও উপকূল অঞ্চলের ভূমিকা রয়েছে। উপকূলের মানুষগুলো অত্যন্ত সাহসী। ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে উপকূলের মানুষ জীবন যুদ্ধে টিকে থাকে। যদিও বিভিন্ন সময়ের দুর্যোগে এখানকার মানুষের জীবনকে তছনছ করে দেয়। ‘৭০-এর ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ের কথা আমার মনে আছে। তখন আমি ৫ম শ্রেণিতে পড়ি। ঘূর্ণিঝড়ের পরে পত্রিকার পাতা খুলে দেখি, লাশ আর লাশ। গাছে গাছে লাশ ঝুলে আছে। ওদিনের ভয়াবহতার কথা কখনো ভুলতে পারবো না।”
প্রধান অতিথি আরো বলেন, “উপকূলের অঞ্চলের সুরক্ষায় উপকূল দিবসের দাবিটা যৌক্তিক। তাই দিবসটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানাই। তাহলে অন্তত একটি দিন সবাই বিশেষভাবে উপকূলের মানুষের কথা বলবে।”
বিশেষ অতিথি বলেন, আমি নিজেই এ ১৯৭০সালের ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যক্ষদর্শী। সে সময়ে ভুলুয়া নদীরপাড়ে ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ততার চিত্র দেখতে গিয়েছি। সদরের ভবানীগঞ্জ পর্যন্ত গিয়ে দেখি দু’একটা কলা গাছ ছাড়া আর তেমন কিছুই চোখে পড়েনি। মানুষের ধান সব ভেসে ছিলো বন্যায়। বিশেষ করে কমলনগরের চর পাগলা এলাকা বন্যায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিলো।
১৯৭০সালের এ ভয়াল ঘূর্ণিঝড় স্মরণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ৬০টি স্থানে বেসরকারিভাবে দিবসটি পালিত হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দিবসটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিবসটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে উপকূল দিবস বাস্তবায়ন কমিটি। আর এতে সহযোগিতা করছে উপকূল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, কোস্টাল জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক, চেইঞ্জ ইনিশিয়েটিভ, মাসিক পূর্বাপর, আলোকযাত্রা এবং নির্বাহ।
0Share