এ বছর তীব্র শীতেও এখন পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে শীতার্তদের মাঝে এবার কোন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা বা রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নেতা-কর্মীরা কেউই কম্বল বিতরণ করেননি। শীতের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে, এতো কনকনে শীতে শীতার্ত দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু অন্যান্য বছর নির্বাচনী আলোচনায় আসার জন্য খুব আয়োজন করে দুস্থদের কম্বল দিতে আসতেন রাজনৈতিক নেতারা। এতে করে হতাশ ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপকূলীয় অঞ্চলের নদী তীরবর্তী ও নিম্নআয়ের মানুষজন রাতের তীব্র ঠাণ্ডায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। অথচ প্রতি বছর রাজনৈতিক সংগঠন, বিভিন্ন সংস্থা ও সামাজিক সংগঠন শীতবস্ত্র বিতরণ করত, তারা এবার কার্যত নীরব। কারণ এখনতো আর নির্বাচন নেই। নির্বাচন আসলেই রামগতি অঞ্চলে কম্বল বিতরণের হিড়িক পড়ে।
মেঘনার পাড়ের এক বাসিন্দা বলেন, প্রতিবছর দু-চারটা শীতবস্ত্র পেতাম। কিন্তু এ বছর তীব্র শীতেও এখন পর্যন্ত শীতার্তদের মাঝে কোন সরকারি কিংবা বেসরকারি সংস্থা বা রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কেউই কম্বল বিতরণ করেনি
উপকূলের এক দিন মজুর জানান, অন্যান্য বছর আলোচনায় আসার জন্য দুস্থদের কম্বল দিতে আসতেন রাজনৈতিক নেতারা। এবার এখন পর্যন্ত কেউ কোনো খোঁজ-খবর নেয়নি। রাতে প্রচণ্ড ঠান্ডায় ঘুমাতে পারি না।
মেঘনার পাড়ের আরেকজন দরিদ্র নারী বলেন, ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে শীতে কষ্ট আছি। অবহেলিত অঞ্চলে আমাদের জন্য কেউ কিছু করছে না।
কলেজ শিক্ষার্থী মো. সাবিদ জানান, নির্বাচন তো অনেক দূরে তাই মনে হচ্ছে আলোচনায় কারো আসার দরকার নেই। এ বছর শীতবস্ত্র বিতরণে কোনো সরকারি উদ্যোগ দেখা যায়নি। একই সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক দল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোও নিরব।
রামগতি-কমলনগর বাঁচাও মঞ্চের আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, রাজনীতির তালমাতাল পরিস্থিতির কারণে এবার শীতার্তদের কেউ কম্বল দেয়নি। উপকূলের দুস্থ মানুষগুলো কষ্টে কথা চিন্তা করে সরকার, স্থানীয় সংগঠন ও সমাজের বিত্তবানরা দ্রুত শীতবস্ত্র বিতরণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, জেলায় কম্বলের বরাদ্দ এসেছে। জেলা থেকে উপজেলায় উপবরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে তা দ্রুত শীতার্তদের মধ্যে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মিসু সাহা নিক্কন/বার্তা স/12/24
77Share