নিজস্ব প্রতিনিধি:চার লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ করে সৌদি আরবে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন ফাহাদ হোসেন (২২) নামে এক যুবক। সৌদি আরবের কোন এক কপি শপ বা হোটেলে কাজ দেবার কথা বলে তাকে সৌদি পাঠানোর ব্যবস্থা করে তোফায়েল আহম্মদ নামে তাদের এক প্রতিবেশী।
কাঙ্খিত কাজ না দিয়ে ওই যুবককে সৌদি আরবে নিয়ে সেখানের বিভিন্নস্থানে রেখে দেওয়া হয়। পরে ‘আকামা’ করে দেওয়ার কথা বলে তার পরিবারের কাছ থেকে আরও একলাখ টাকা নেওয়া হয়। বিদেশ যাবার পর থেকে ফাহাদের সাথে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ থাকলেও গত ২০ দিন থেকে তার কোন খোঁজ নেই বলে অভিযোগ তার পরিবারের।
ফাহাদ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মাদাম সংলগ্ন ১ নম্বর ওয়ার্ডের মিলন কাজীর ছেলে। গত ২৫ জুলাই সে সৌদি আরবে পাড়ি জমায়।
এদিকে দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হওয়ায় অভিযোগ এনে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ফাহাদের মা নাজমা বেগম।
তার অভিযোগ, ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়ে প্রতারিত হয়েছেন, এখন আবার অভিযুক্ত তোফায়েল আহাম্মদ তাদের বিরুদ্ধে টাকা পাবার কথা বলে আদালত ‘সাজানো’ মামলা দিয়েছেন।
ছেলের কোন খোঁজ না পেয়ে তিনি এখন চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন। ছেলের খোঁজ পেতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন মা নাজমা বেগম।
তার দাবি, ধারদেনা করে আশা নিয়ে ছেলেকে সৌদি পাঠিয়েছি, এখন সে ছেলের খোঁজও পাচ্ছি না। ছেলে কি অবস্থায় আছে, কোথায় আছে তা আমরা জানি না।
নাজমা বেগম বলেন, আমাদের প্রতিবেশী তোফায়েল আহাম্মদ দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিল। এখন সে বাড়িতে আছে। তার মাধ্যমে ছেলেকে সৌদি আরবে পাঠায়। তাকে কপিশপ বা কোন আবাসিক হোটেলে কাজ দেওয়ার কথা ছিল। ভিসার দাম নিয়েছে চার লাখ ১৫ হাজার টাকা। প্রথমে দুই লাখ টাকা, পরে ১৫ হাজার এবং সর্বশেষ দুই লাখ টাকা তোফায়েল ও তার স্ত্রীর হাতে তুলে দিই। গত ২৫ জুলাই সে সৌদি আরবে পৌঁছে। সেখানে তার ভাগিনা ইমামের কাছে যায় সে।
এরপর তাকে কোন কাজ না দিয়ে দুই মাস একটি ঘরে তালাবদ্ধ রাখা হয়। তাকে ঠিকমতো খাবার দিত না। আমার ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে আমি দালালের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমার ছেলের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। তখন আমার ছেলে আমাকে তার করুণচিত্র খুলে বলে। পরে আমি তোফায়েলের সাথে যোগাযোগ করলে সে আমার ছেলের আকামা তৈরী করে দিবে বলে আরও একলাখ টাকা দাবি করে। আমি সে টাকা পরিশোধ করি।
পরে আমার ছেলে আমাদের এক আত্মীয়ের মাধ্যমে একটি আবাসিক হোটেলের ক্লিনার হিসেবে চাকরী নিলে দালালরা আমার ছেলের আকামাতে গ্রুপ মেরে দেয়। এতে সেখান থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে আমার ছেলে সেদেশে পলাতক অবস্থায় ছিল। গত ২০ দিন থেকে আমার ছেলের কোন খোঁজ পাচ্ছি না।
অভিযুক্তদের বিচার দাবি করে তিনি বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর আমি পুলিশ সুপারের কাছে তোফায়েল আহাম্মেদ ও তার স্ত্রী আয়েশা খাতুনের নামে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে টাকা পাওয়ার সাজানো অভিযোগ তুলে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তারা ভিসা দেওয়ার সময় আমাদের সাথে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। আর কেউ যাতে তাদের মিথ্যা প্রলোভবে পড়ে বিদেশে না যায়।
ফাহাদের বড়ভাই মো. কাদের বলেন, আমার ভাইকে যে কাজে দিবে বলে দিয়েছে, সে কাজ দেওয়া হয়নি। মোটা অংকের টাকা খরচ করে আমার ভাইকে সৌদি পাঠিয়ে আমরা প্রতারিত হয়েছি। এখন উল্টো আমাদের হয়রানি করার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, নাজমা বেগম যেসব অভিযোগ করেছে, সেগুলো মিথ্যা।
668Share