তাবারক হোসেন আজাদ, রায়পুর: রায়পুর উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের বর্ডার বাজার এলাকায় নব্বই বছরের এক বৃদ্ধ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করেছেন এবং উক্ত মামলায় আসামী হয়ে ৭ মাস পলাতক থাকায় প্রতিপক্ষরা তার বসত ঘরের সমস্ত মালামাল লুটে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন। তিনি জানান,সাত মাসপর গত সোমবার (২৭ জানুয়ারী) জামিনে এসে বাড়িতে গিয়ে দেখেন তার ঘরের আসবাবপত্র কিছুই নেই। বৃদ্ধের অভিযোগ মামলার বাদীপক্ষ তার ঘরের সমস্ত মালামাল লুট করেছেন। ফলে ওই বৃদ্ধ বর্তমানে অনাহারে ও তীব্র শীতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারী) সকালে ওই বৃদ্ধ আনার উল্যা সাংবাদিকদের জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে তার ভাগনী নরজাহানকে অনৈতিক কাজ ও একাধিক বিয়ে করার অপরাধে তার শশুরবাড়ী থেকে তারে বিতাড়িত করে। তার অসহায়ত্ব দেখে মানবিক কারনে আমার বসত ঘরের পাশে তাদের কে বসবাস করার জন্য সামান্য জমি দান করি। কিন্তু সে উল্টো এলাকার কিছু খারাপ প্রকৃতির মানুষের সাথে মিশে বসত ভিটা থেকে আমাকেই বিতারিত করার পায়তারা করে। এতে ব্যার্থ হয়ে ২০১৩ সালের ১৪ জুন তার আট বছরের শিশু মেযেকে দিয়ে আমার মিথ্য ধর্ষনের কাহিনী সাজায় এবং মিথ্যা মামলা দায়ের করে। বাচার তাগিদে আমি ঢাকায় গিয়ে পলাতক থাকি। ৭ মাস পর আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন চাইলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। বাড়ী এসে দেখি নুর জাহানসহ তার লোকজন আমার বসত ঘরের সকল মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
বৃদ্ধ আনার উল্যাহ জানান প্রায় আট বছর আগে তার বিরুদ্ধে নুরজাহান শিশু হত্যার অভিযোগ এনে থানায় আরো একটি মামলা করে। পরে মিথ্যা মামলার কারণে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেয়। বর্তমানে নুরজাহানের মিথ্যা যৌতুক মামলায় তার সাবেক দুই স্বামী বিল্লাল হোসেন ও মনির হোসেন লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারে রয়েছেন। সবশেষে তার লালসার শিকার হয়ে এখন আমি সবকিছু হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। তিনি জানান এ ঘটনায় সমাজের গন্যমান্যদের কাছে বিচারের দাবি জানিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।
এ বিষয়ে চরপাতা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর হোসেন ও ইউপি সদস্য মোঃ আমিনসহ কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, বৃদ্ধ আনার উল্যার বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষন মামলাটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মুলক। ন্যায় বিচারের জন্য তারা আদালতের প্রতি অনুরোধ জানান।
এ দিকে মামলার বাদী শিশুর মা নুরজাহান বলেন, আমার শিশু মেয়েকে ধর্ষন করেছে তা মেডিকেল রিপোর্টে ধরা পড়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি তা আইনের মাধ্যমে প্রমান হবে। আনার উল্যার বসত ঘরের মালামাল লুট করেননি বলে দাবি করেন তিনি।
রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ ফোরকান বলেন, মামলাটি তদন্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দেওয়া হয়েছে। তা আইনের মাধ্যমে নিস্পত্তি হবে। ঘটনাটি মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্র বলে এলাকাবাসী আনার উল্যার পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক থাকায় তার জবানবন্ধি নেয়া সম্ভব হয়নি।
0Share