ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে নদী ও সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আজ শনিবার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে ও সাগরে যেতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপকূলের জেলেরা সকল প্রস্তুতি শেষ করছেন।
আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে বিভিন্ন ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা কেউ নৌকায় জাল তুলছেন, কেউ নৌকায় ক্রুটি সেরে নিচ্ছেন। কেউ নৌকায় রঙের কাজ সারছেন। রামগতির বিভিন্ন মাছঘাটগুলোতে এবং আশপাশের কয়েক শত নৌকায় চলছে ভীষণ ব্যস্ততা। কারও কথা বলার ফুরসত নেই।
সাগরে যাওয়া একটি নৌকার মাঝি জবিয়ল হক জানান, ‘এ বছর মাছ তেমন পাইনি। আবার বর্ষায় দফায় দফায় সাগরে নিম্নচাপ ও লঘুচাপ লেগেই ছিল। এবার গিয়া দেখিা আল্লাহ কি রাখছে কপালে।’
মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করা জেলে জমির উদ্দিন মাঝি জানান, ‘মেঘনা নদীতে দীর্ঘদিন নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। গেলো মওসুমে ইলিশের আকাল ছিল, এবার অবসর কাটিয়ে যাত্রায় ভালো ইলিশ ও অন্যান্য মাছ ধরা পড়বে বলে আশা করছি।’
বড়খেরী নৌ পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) সফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে এ উপকূলের ঘাটগুলোতে জেলেরা সাগরে যাওয়ার জন্য খাদ্যসহ নানা সরঞ্জাম নিয়ে জড়ো হচ্ছেন। কোন ট্রলার এক সপ্তাহের জন্য, কোনটি দুই সপ্তাহের জন্য সাগরে এবং ছোট ছোট নৌযান নদীতে যাওয়ার প্রস্তুতিতে রয়েছেন। এবার সাগর থেকে উপকূলের নদীর মোহনায় ইলিশ কম এসেছে, তাই জেলে পল্লীগুলো রয়েছে চরম সঙ্কটে। জেলেদের জালে ভালো পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়লে তাদের এ সঙ্কট কেটে যাবে বলে আশা করছি।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৌরভ উজ-জামান বলেন, এ নদীতে ডুবোচর, জলবায়ু পরিবর্তন ও পবিবেশগত কারণেও ইলিশ উৎপাদন কম ছিল। এবার মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে মোবাইল কোর্টের সংখ্যা ১৫টি, মোট অভিযানের সংখ্যা ৪৪টি, পরিদর্শনকৃত মাছঘাট, আড়ৎ, বাজার ২৫৬টি, আটককৃত জাল এক লক্ষ ৩৯ হাজার মিটার এবং মোট মামলার সংখ্যা ২টি(আটক ৭ জন)। এছাড়া নিষিদ্ধ সময় বরফ পরিবহনকালে ২ টি ট্রলার, ২টি ট্রাক ও ১টি ট্রাক্টর আটক করে মামলা প্রদান করা হয়। অভিযানে ২২ লক্ষাধিক টাকার মাছ ও জাল জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত জালের মূল্য আনুমানিক ২১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা এবং জব্দকৃত একশ কেজি মাছের আনুমানিক মূল্য ৮০ হাজার টাকা। সার্বিকভাবে সফল অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
উল্লেখ্য: গত ৪ অক্টোবর মধ্য রাত থেকে ২৫ অক্টোবর মধ্য রাত পর্যন্ত মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিন সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার এ ২২ দিন সকল ধরনের জাল ফেলা ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসময় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাত করণ, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।



25Share