ক্ষণিকা
মাছুম জুলকারনাইন
কতোদিন হলো তোমাকে দেখি না!
পঞ্জিকার হিসেবে এক বছর হবে হয়তো
কুয়াশার চাপ বেড়েছে, বেড়েছে শীতের প্রকোপ
আঙিনার বেলগাছটার পাতা থেকে ঝরে পড়ছে শীতের কান্না।
গত শীতে তোমার সাথে এই বেলতলায় কতোবার বসেছি; তার ইয়ত্তা নেই
উঠোনের পাশে মেহেদীগাছটা আমার দিকে অপলক নেত্রে তাকিয়ে থাকে,
তাকিয়ে থাকে গন্ধরাজ গাছটাও যার ফুল তুমি খোঁপায় গুঁজতে।
বা-পাশের হৃদয় পাড়ায় এখন কেবল তোলপাড়।
মেহেদী পাতায় কতোবার রাঙিয়েছি তোমার হাত!
তোমার শুভ্রপায়ে আলতা মেখেছি গত শীতে,
তোমার রেখে যাওয়া আলতার প্যাকেটি এখনো ঝুলছে দখিন বারান্দায়,
প্রতিদিন গোসল সেরে যে জানালার কপাট খুলে বসতে;
এখন তা বন্ধ থাকে দিনরাত সারাক্ষণ।
এখনকার শীতে প্রচন্ড কাঁপুনি আসে,
রাতে তেমন একটা ঘুম হয় না; কান পেতে শুনি ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক,
মাঝে মাঝে শিয়াল ডেকে ওঠে; আমি ভয়ে আঁতকে উঠি,
গেল শীতে ভয় পেয়ে তুমি আমায় জাঁপটে ধরেছিলে,
আর এখন কেবলই শূণ্যতা!
শুধু তোমার সেলাই করা কাঁথা গায়ে দিতেই তোমাকে অনুভব করি,
যেন আমার সারা গায়ে তোমার কোমল হাত স্পর্শ করে গেছে!
কুয়াশার মতো আমার চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে ক্ষণিকা,
যেন তোমার স্পর্শ আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছে।
আরেকটু জাঁপটে ধরো ক্ষণিকা; যেন গভীর ঘুমে নিমজ্জিত হই!
0Share