স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭ তম মৃত্যু বার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস-২০২২ উপলক্ষে শোকাবহ আগষ্টের কাব্যগাঁথা “মুজিব চিরঞ্জীব”
সর্বকালের সেরা
রওশন রুবী
মুজিব হলো আলোর মিছিল শুদ্ধ তারার দল
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব সমুজ্জ্বল
যাঁর নামে আজ ঝর্ণা বহে কণ্ঠে কারুকাজ
ছিন্ন করে কুটিল-সময় পরান ফুলেল তাজ
দরজা খুলে ভোরের খুশি তারই মধুর ডাকে
এপথ ওপথ করে করে সকল বাঁকে বাঁকে;
লক্ষ কোটি স্বপ্ন-বীজের ভ্রুণ বিছালেন যিনি
সর্বকালের সেরা নেতা জাতির পিতা তিনি।
ভালোবাসাতে আমার কোনো আগ্রহ নেই
কার্তিক সেনগুপ্ত
ভালোবাসাতে আমার কোনো আগ্রহ নেই –
এতটুকু কারোর জন্য
ব্যাকুলতায় ছটফট করেনা মন অকারণ ।
যখন দেখি –
না ফোটা ফুলের কলিটি ছিঁড়ে ফেলে কোনো দৈত্য
শোভন সৌন্দর্য ছটা উপড়ে ফেলে কোনো অসভ্যজন।
নির্লজ্জের মতো শোষিত হয় ঘামে ভেজা নোনা জল
উৎকোচ ও দুর্নীতি ছাড়া মেলে না শুভফল।
উলঙ্গ উল্লাসে গুরুর গলে পরিয়ে দেয় কলঙ্ক মালা
স্তনকর শোধিতে কর্তিত হয় স্তন,
নাঙ্গলিরা আজ কতো হেলাফেলা ।
যদি ভালোবাসি – বাসবো ঠিক
কৈলাসে বসা শৌর্য -বীর্যধারীজটায়ু শিবের মতো
সতির অপমানে যে লণ্ডভণ্ড করেছে ত্রিভুবন যতো।
না হয়-
নির্বান্ধব নিরুদ্দেশ হবো,উপেক্ষা করি চেনাজনের
অচেনা মায়ার শেকল
কবিতার গর্জনে ভাঙবো পাপড়ি শতদল ।
স্বপ্নধারা
ফারুক হোসেন শিহাব
স্বপ্ন দেখা কে শিখালো কে জাগালো মন-প্রাণ,
কার ইশারায় দামাল ছেলেরা কাঁপায় জমিন-আসমান ।
কার কথায় সেই শোষণকালে জাতি ঐক্যবদ্ধ,
কার আহ্বানে জেগেছে বাঙালি পৃথিবীকে করে স্তব্ধ ।
কে শিখালো অধিকার আধায় করতে হবে রাজপথে,
কার প্রেরণায় এতো সাহস নিরস্ত্রদের বীর রথে ।
কে রাঙালো হৃদয় দুয়ার কে দেখালো জয়-নিশান,
কার ডাকে সব রণে ঝাঁপায় জীবন করে বলিদান ।
কার তর্জনী বিশ্ব কাঁপায়, কাঁপায় আজও রণাঙ্গণ,
কার আওড়ানো বজ্রধ্বণী শাণিত করে জাতীর মন ।
দূর্ভাগা এই বাঙালিকে- হিমালয়সম তুললো কে ?
কার কারণে স্বাধীন হলাম- বীর জাতীর সম্মানে ।
কার ত্যাগের মহিমা আজ- তোমার-আমার প্রেরণা,
কার দেখানো শুভ্র পথই বাঙালি জাতীর ঠিকানা ।
তিনি আমাদের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান,
তার চেতনা-স্বপ্নধারায় বাঙালি জীবন বহমান ।
কাঁদো বাঙালি কাঁদো
অংকুর চন্দ্র দেবনাথ
কাঁদো বাঙালি কাঁদো
কাঁদতে পারোনি সেদিন তোমরা
কাঁদতে পারেনি চাঁদ ও
কাঁদো বাঙালি কাঁদো
রাতের আঁধারে এতিম হয়েছো
জনক হারিয়েছে দেশ
খুনীরা ভেবেছে বেশ হয়েছে
এখানেই মুজিব শেষ !
মুজিব বাঙালির শিকড়ে গাঁথা
কাদামাটি জলের ভ্রুণ
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি
আজ মহীরুহ কোটিগুণ ।
ভুলিবে কিসে কচিতাঁজা প্রাণ
ছোট রাসেলের মুখখানি
কাঁদো বাঙালি অঝোরে কাঁদো
ঝরাও হৃদয়ের গ্লানি
কাঁদো বাঙালি কাঁদো
জনকের ঋণ শোধিবে কিসে
অঝোরে ঠুঁকরে কাঁদো
কাঁদো কাঁদো কাঁদো
খুনিরা এখন প্রজন্মে ঘুরছে
শুধু সুযোগের অপেক্ষায়
চেনা মুখগুলোই অচেনা হবে
তোমার,পরিচিত আঙ্গিনায়
বিশ্বাসে ঠকেছে মুজিব নিজেও
প্রহরীকে রেখো পাহারায়
সাবধানী হও বাঙালি আরো
শত্রু সমূখেই খাবি খায়
বাধা পরোনাকো তৈল বলয়ে
পিচ্ছিল অহিংসার পথ
কাঁদো বাঙালি ফুঁপিয়ে কাঁদো
পিতৃস্মরণে নাও দীপ্ত শপথ ।
পিতা আসেন ধীরে
সুমন চক্রবর্তী
তিনি আসেন ধীরে
সবুজ শস্যের আলপথ পেরিয়ে
মেঠো মাটির পথ ধরে
তিনি আসেন ধীরে ।
বঞ্চিত, শোষিত ,অসহায় যতো
পিছু নেয় তার
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো
বজ্র কন্ঠে স্বপ্ন দেখান তিনি
ইদুঁরের উৎপাত বিহীন সুন্দর
এক দেশ গড়ার
তিনি আসেন ধীরে ।
শোষক আর শয়তানের একই রূপ
প্রগতিকে রুখে দেয়
হত্যা করে সত্যের ভ্রুণ কে
মাটি চাপা দেয় কল্যাণকামী মানুষদের
আর অট্টহাসি হাসে
সব কিছু শেষ করেছে বলে ?
যা কিছু মহান, মৃত্যু নেই তার
যা কিছু সত্য তাই আসে ধীরে
তিনি আসেন ধীরে ।
মুজিব চিরঞ্জীব
কামরুল হাসান হৃদয়
মাসটি শোকের, দুঃখে মরি, মৃত্যু হলো পিতার
করলো মোদের পিতৃহারা লাভটা হলো কী তার ?
বাঙালি জাতীর নেতার বুকে ঘাতক দলের গুলি
ধানমণ্ডির সিঁড়ি সাক্ষী বন্ধ পিতার বুলি !
রক্ত মাখা সিঁড়ি আজও দুঃখে দেখি পাথর
শেখ পরিবার নয়তো শুধু, দেশটাও শোকে কাঁতর
রাত পোহালে নেইতো কারও দুঃখ শোনার লোক
দেশের ছেলের মৃত্যু হলো সব হৃদয়ে শোক ।
ছোট্টসোনা শেখ রাসেলও কবর পথিক সেদিন
ঘাতক সৈন্য দেয়নি রেহাই, কু-জন্মা সব বেদিন !
পাখ পাখালির কান্না সেদিন, মুর্ছনাতে সব
স্বদেশ কালো, স্তব্ধ মানুষ, বন্ধ কলরব ।
বিশ্ববাসীর শ্রদ্ধা তোমায়, মরেও অমর তুমি
ছোট্ট খোকা মুজিব তোমার এ দেশ এবং ভূমি,
শোকের দিনে বুকের ভেতর উঠায় ব্যথার রেশ
তুমিই সেরা বঙ্গপিতা, তুমিই হলে দেশ ।
বঙ্গভূমির সবার মনে স্বাধীনতার বাণী
প্রথম তুমি শুনিয়েছো আমরা সবাই জানি
দেশ যতদিন থাকবে অমর ততদিনই মুজিব
গভীরভাবে সবার মনে তুমিই চিরঞ্জীব !
0Share