লক্ষ্মীপুরের রামগতি-আলেকজান্ডার সড়কের বেহাল অবস্থা। এই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কে সংস্কার না হওয়া এবং সম্প্রতি মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির স্রোতে রামগতি উপজেলার ২০ কিলোমিটার পাকা ও ৬০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়াও, কয়েকটি ব্রীজ-কালভার্ট ভেঙ্গে যায়।
রামগতি-আলেকজান্ডার সড়কের মালি বাড়ি সংলগ্ন ব্রীজটির দু’পাশে সড়কের মাটি সরে গিয়ে ব্রীজটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর ফলে রামগতি-বিবির হাটের মধ্যে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৭ কিলোমিটার রামগতি-আলেকজান্ডার আঞ্চলিক সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা। যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা হাঁটা-চলাই কঠিন হয়ে পড়েছে। সড়কগুলোর মধ্যে চর গোসাই রোড, বিবির হাট রোড, দরবার রোড, মোল্লা রোড, মধ্য চর আলগী রোড, চর টবগী রোড, রহমত সুয়া রোড ও রব রোড বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্থ ও চলাচলের অযোগ্য সড়কগুলো এবং ব্রীজ, কালভার্টগুলো দ্রুত মেরামতের মাধ্যমে রামগতি-আলেকজান্ডারে যান চলাচলের উপযোগী করে তোলার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
পথচারী, সিএনজিচালক, মোটরসাইকেলচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রয়োজনের তাগিদে সড়কগুলো দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই সিএনসি, অটো, মোটরবাইকের যন্ত্রাংশ বিকল হওয়াসহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে হচ্ছে। রামগতি বাজার থেকে সদর আলেকজান্ডারে যেতে আগে সময় লাগতো আধা ঘন্টা। আর এখন লাগে এক ঘন্টারও বেশি। তাও আবার চলতে হয় দক্ষিণাঞ্চলবাসীর একমাত্র অনিরাপদ যান সিএনজি দিয়ে।
অনেকে বলছেন, আমরা লক্ষ্মীপুরের দক্ষিণাঞ্চলের সাধারণ জনগণ সব সময়ই অবহেলিত। দীর্ঘদিন ধরে সড়কের বেহাল দশার কারণে লক্ষ্মীপুর থেকে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অথচ এ অঞ্চলে লক্ষাধিক লোকের বসবাস।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এবং সম্প্রতি জোয়ার ও ভাটার পানির স্রোতে সড়কগুলো ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পাকা সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং ও খোয়া ওঠে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রামগতি-আলেকজান্ডারে যাওয়ার যে কয়েকটি রাস্তা রয়েছে সবগুলোরই অচলাবস্থা। ফলে রামগতি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ উপজেলা সদর কিংবা জেলা শহরে যেতে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়।
এ সুযোগে সিএনজিচালকরা ইচ্ছেমতো ভাড়া হাঁকিয়ে নিচ্ছে। কেননা অনেক বছর ধরে এ অঞ্চলে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের মাধ্যমে বাস চলাচলের উপযোগী করে তোলার দাবি জানান তারা।
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রহিম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ পাকা সড়কগুলো এবং কয়েকটি ব্রীজ, কালভার্ট জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ ব্রীজ, কালভাট ও সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করতে বলা হয়েছে।
রামগতি-আলেকজান্ডারের মধ্যে যান চলাচলের উপযোগী করতে বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন বলে জানান লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান।
0Share