লক্ষ্মীপুরের ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন কবলিত কমলনগর এবং রামগতি উপজেলায় মেঘনা নদীর তীররক্ষা বাঁধ নিমার্ণের প্রথম টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। এতে প্রথম অবস্থায় ৩ কিলো ৪শ মিটার কাজের দরপত্র আহবান করা হয়। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষের পর আগামী ১ নভেম্বর থেকে কাজ শুরু হয়ে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। চলতি মাসের মধ্যে আরো দরপত্র প্রকাশ হবে বলে জানিয়েছেন, লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফারুক আহমেদ। তবে প্রথম থেকেই এ কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে চায় এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (১৭ আগষ্ট) ই-জিপি টেন্ডার পোর্টাল এবং বুধবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ৪টি প্যাকেজ এবং ১১ লটে বিভক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে মোট ৩৪শ মিটার বাঁধ নির্মাণ করা হবে রামগতি এবং কমলনগরে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে টেন্ডার প্রক্রিয়া চুড়ান্ত হবে।
মেঘনা নদীর “বড়খেরী, লুধুয়াবাজার এবং কাদিরপন্ডিতেরহাট বাজার’ তীররক্ষা নামের ৩৩.২৬কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পটি ( Project Code 224337900 ) গত ৩ জুন তারিখে পাশ করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক । এতে মোট ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার কোটি টাকা ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ১১টি লটের (Lak/W-10/Lot-01/2021-2022) মধ্যে ১ম লটে ২৭৫ মিটার, ২য় লটে ২৭৫ মিটার, ৩য় লটে ৩৫০ মিটার, ৪র্থ লটে ৩৫০ মিটার, ৫ম-১০ম লটের প্রতিটিতে ৩০০ মিটার এবং ১১তম লটে ৩৫০ মিটার সহ মোট ৩ হাজার ৪০০ মিটার কাজ হবে।
এদিকে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারী এবং নদী বাধঁ নির্মাণ আন্দোলনের সাথে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি টেন্ডার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে পোস্ট দেয়া শুরু করে।
তাদের দাবী মেঘনা নদী ভয়াবহ ভাঙ্গনে থেকে লক্ষ্মীপুরে রামগতি এবং কমলনগর উপজেলা কে রক্ষার জন্য একমাত্র উপায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দিয়ে এ কাজ করানো। কিন্ত টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরুর পরপরই তাদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে কাজ হয়তো সেনাবাহিনী দিয়ে করা হবে না।
নেটিজেনদের দাবী যদি সেনাবাহিনী দিয়ে কাজ না করা হয়, তবে দুর্নীতির আশংকা থাকবে ব্যাপক। উক্ত ব্যক্তিদের দাবী সেনাবাহিনীর কাজ এবং ঠিকাদারের কাজ মিলে ২ ধরনের কাজের প্রমাণই রামগতি এবং কমলনগরে আছে। সেনাবাহিনীর কাজের মান বিশ্বমানের। আর টিকাদারের মাধ্যমে শেষ হওয়া কমলনগরের মাতবরহাট বেড়িঁ বাঁধ এখন হুমকির মুখে।
ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্তকারীদের মধ্যে রয়েছেন, কমলনগর-রামগতি বাঁচাও মঞ্চের আহবায়ক এডভোকেট আবদুস সাত্তার পলোয়ান, নদী বাঁধ আন্দোলনকারী এডভোকেট রিপন পাটোয়ারী, সেচ্ছাসেবি সংগঠন স্বপ্ন নিয়ে এর প্রতিষ্ঠাতা আশরাফুল আলম হান্নান প্রমুখ।
এদিকে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফারুক আহমেদ জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে ৩ হাজার ৪শ মিটার কাজের টেন্ডার হয়েছে । চলতি মাসে আরো হবে । এর মধ্যে বাঁধ ছাড়াও ২০টি স্লুইচ গেটও তৈরি করা হবে। জাতীয় প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র (এনটিসি) এবং উন্মুক্ত পদ্ধতি(ওটিএম) এর মাধ্যমে দরপত্রগুলো আহবান করা হয়েছে।
0Share