পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিম বলেছেন, বালু সংকটের কারণে মেঘনার তীর রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চাঁদপুর থেকে বালু এনে বাঁধের কাজ শুরু করা হবে। আমি এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রীর আলোচনা করবো। মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ এলাকায় আমি ৫ বার এসেছি। কোন মন্ত্রী কোন এলাকায় এতবার সফর করেনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় প্রকল্প এক সাথে পাশ হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা রামগতি-কমলনগরের মানুষদের দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করে একনেকে এত বড় প্রকল্প এক সাথে পাশ করেছেন। বাঁধ নির্মাণ বাস্তবায়নে আপনাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে।
ওই সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উপস্থিত সাধারণ মানুষকে বলতে শুনা গেছে স্থানীয় সাংসদ ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জায়েদ ফারুক শামীম বার বার এসেছেন তবে, কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না।
উপস্থিত ছিলেন- লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) আবদুল মান্নান, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ, জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহম্মদ, কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান ও কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে ভাঙছে মেঘনা। মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, পুল-কালভার্ট, ফসলি জমি, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ পুরনো অনেক স্থাপনা। দীঘদিন থেকে মেঘনা নদীর ধারাবাহিক ভাঙনে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার প্রায় ২৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এ সময় ভিটেমাটি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক পরিবার। ২০২১ সালের জুন মাসে ‘লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বড়খেরী ও লুধুয়াবাজার এবং কাদিরপন্ডিতেরহাট এলাকা ভাঙন হতে রক্ষাকল্পে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পটি’ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন হয়। ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
একই বছরের আগস্ট মাসে প্রকল্পের টেন্ডার হয়। দ্রুত বাস্তবায়নে পুরো কাজ ৯৯ প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। চলতি বছরের ৯ই জানুয়ারি প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের সময় সামান্য কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হলেও এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে প্রকল্পের কাজ।
এ দিকে প্রতিনিয়ত ভাঙছে মেঘনা। লঘুচাপ ও পূর্ণিমার প্রভারে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন আরও তীব্র হচ্ছে। এ সময় বাঁধ নির্মাণের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলে আরও বিস্তীর্ণ জনপদ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
0Share