কমলনগর প্রতিনিধি | রামগতির চর গাজী ইউনিয়নের বয়ারচর এলাকায় গাবতলী খালের স্লুইসগেট সংলগ্ন মধ্যখানে তিন’শ মিটার জায়গায় জিও টিউব ডাম্পিং করে বেড়িবাঁধ নির্মান করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে মেসার্স এসকে এমদাদুল হক আল মামুন কোম্পানি।
এতে প্রায় ত্রিশ হাজার বসতি ভাঙন থেকে রক্ষা পান। সাথে দীর্ঘ সময়ের নির্মিত স্লুইসগেট বেঁচে যায়। স্থানীয়রা জানান, অতিরিক্ত ঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও স্রোতের তিন’শ মিটার বেঁড়ি তলিয়ে যায়। এতে আশপাশের প্রায় ত্রিশ হাজার বসতি ক্ষতিগ্রস্তের মুখে পড়ে। কিছু বসতি ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র চলেন যান। স্থানীয় মো.কবির হোসেন, মো.নোমান ও শেরআলী জানান, হঠাৎ মেঘনার তীব্র জোয়ারে গাবতলী খালের স্লুইসগেট সংলগ্ন দু’পাড় তলিয়ে যায়। এতে আশ-পাশের প্রায় ত্রিশ হাজার বসতি ক্ষতির মুখে পড়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে টানা দু’মাস রাত-দিন বৃষ্টিতে ভিজে-রৌদ্রে শুকিয়ে তারা জিও টিউব, বস্তা ডাম্পিং করেন। এবং বেড়িবাঁধ দিতে সক্ষম হন। এতে স্থানীয় বসতিদের মধ্যে স্বস্তি দেখা যায়। মাদ্রাসার ছাত্র নোমান সিদ্দিকী জানান, খালের দু’পাড়ে টিউব ডাম্পিং করে বেড়িবাঁধ দেয়ার কারণে তোতার বাজার, তেগাছিয়া বাজার, টাংকি বাজার, মাইন উদ্দিন বাজার, দিদার বাজার, জিয়ার বাজার, সাহাব মার্কেট, নতুন বাজার, লেঙ্গার দোকান বাজার, মীর বাজার এবং রব্বানীয়া মাদ্রাসা, মোহাম্মদ পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদ পুর ইসলামী দাখিল মাদ্রাসাসহ অসংখ্য বাজার, স্কুল মাদ্রাসা, মসজিদ রক্ষা পায়। এছাড়াও রামগতির পাশ্ববর্তী নোয়াখালীর সুর্বনচরের বেশ কয়েকটি এলাকা রক্ষা পায়।
এসকে এমদাদুল হক আল মামুন কোম্পানি ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার এসএম আরিফ হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশে রামগতির গাবতলী খালের স্লুইসগেট সংলগ্ন দু’পাশের জিও টিউব ডাম্পিং করা হয়। প্রথমে খালের দু’পাশের ৬৫মিটার ভেঙে যায়। এতে কাজ শুরু করে শেষ করতে পারছি না। যতই জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে ততই তলিয়ে যাচ্ছে। এবং দু’পাশের ভাঙন বেড়ে যাচ্ছে। টানা বৃষ্টি এবং নদীর স্রোতের মুখে টিউব, বস্তা ডাম্পিং করে রাখা যাচ্ছে না। ভয়ংকর জায়গায় পরিনত হচ্ছে। প্রায় ১৫-২০মিটার গভীরতা। রাত-দিন প্রচুর লোকজন নিয়ে খালের দু’পাশে ভলগেট ও ড্রেজার মেশিন বসিয়ে কাজ শুরু করি। টানা দু’মাস জিও টিউব, ব্যাগ ডাম্পিং করে বেড়িবাঁধ দিতে সক্ষম হই। ৬৫মিটার জায়গায় কাজ শুরু করে, তিন’শ মিটার কাজে পৌঁছাতে হয়েছে। এটি খুবই ভয়ংকর ও জীবন ঝুঁকির কাজ ছিল।
সম্পূর্ণ বাস্তব অভিজ্ঞতা দিয়ে কাজ করে সফলতা পেয়েছি। এতে আশেপাশের প্রায় ত্রিশ হাজার বসতির বাড়ি-ঘর রক্ষা পেয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান বলেন, রামগতির গাবতলী খালের স্লুইসগেট সংলগ্ন কাজটি সম্পূর্ণ ভয়ংকর ও ঝুঁকির কাজ ছিল। অতিরিক্ত জলোচ্ছ্বাস ও পানি স্রোতে বেড়ি ভেঙে যায়। এতে আশেপাশে প্রায় কয়েকটি গ্রাম ও ঘনবসতি বিলিন হয়ে যাচ্ছিল। মেঘনার ভাঙনে অনেক কোম্পানি কাজ করছিল। তবে এই কাজটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কেউ করতে রাজি হয়নি। পরে এসকে এমদাদুল হক আল মামুন কোম্পানি কাজটি শুরু করে এবং টানা দু’মাস জিও টিউব, ব্যাগ ডাম্পিং করে সফলতা পান। ট্রেন্ডার ছাড়া সম্পূর্ণ মানবিকতা থেকে কোম্পানি কাজটি করেন। প্রসঙ্গত, মেঘনা নদীর ৩৭ কিমি বাঁধ নির্মানে একনেকে ৩১শ কোটি টাকার বরাদ্দের কাজ চলছে। এতে প্রায় ১শ প্যাকেশে বেশ কয়েকজন ঠিকাদার কাজ শুরু করেন।
0Share