নূর মোহাম্মদ: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ঝাউডগী গ্রাম। এই গ্রাম জেলা শহর থেকে ২০-২৫ কিঃ মিঃ দুরে। গ্রামটি কুশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত। এই গ্রামে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ও ইসলামী সোসাইটি ফর লো লেভেল পিপল- ইসোলপ সংস্থার তত্ত্বাবধানে জরিপের মাধ্যমে অতিদরিদ্র ১৬টি পরিবারকে স্যাটিটারী লেট্রিন তৈরী করে দেওয়া হয়। যার তত্বাবধানে ছিলেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জনাব, নূর মোহাম্মদ। এই পরিবারগুলোর স্যানিটারী লেট্রিন ছিল না এবং তারা কাঁচা ও খোলা জায়গায় মল-মূত্র ত্যাগ করতেন।
এই গ্রামেরই একজন বাসিন্দা ষাটর্ধো আঃ রব বিশ্বাস। তার নামেই তার বাড়ী, বিশ্বাসের বাড়ী। বাড়ীতে তার ছেলে-মেয়ে, নাতি-পুতি সহ সদস্য সংখ্যা ১৫ জন। যারা কাঁচা ও খোলা লেট্রিন ব্যবহার করতেন। বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় স্যানিটারী লেট্রিন পেয়ে এই পরিবার এখন অনেক খুশি। তারা এখন আর খোলা লেট্রিন ব্যবহার করেন না। লেট্রিন থেকে ফিরে সাবান ব্যবহার করেন। বাড়ীতে আগে মেহমান আসলে সমস্যায় পড়ে যেতেন। মেহমানকে অন্যবাড়ীর লোকের ল্যাট্রিন ব্যবহার করতে হতো। এখন আর সেই সমস্যাও নেই। বরং আশপাশের অন্য যাদের ল্যাট্রিন নেই তারাও এখন বিশ্বাসের স্যানিটারী লেট্রিন ব্যবহার করেন। বাড়ীতে আগে রোগ-বালই লেগে থাকতো। এই যেমন, ডায়রিয়া,পেটের পিড়া, কৃমি ইত্যাদি রোগে ভুগতো পরিবারে সদস্যরা। এখন লেট্রিনে যেতে স্যান্ডেল ব্যবহার করেন। স্যান্ডেল ব্যবহারের কারণে ও লেট্রিন ত্যাগের পর সাবান ব্যবহারের ফলে পেটের পিড়া ও কৃমি সমস্যা থেকে রক্ষা পান। এতে পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং অসুখ-বিসুখ জনিত খরচ বেচে যাওয়ার কারণে এই অর্থ পরিবারের উন্নয়নমুলক নানা কাজে খরচ করতে পারছেন।
আঃ রব বিশ্বাসের মত ঝাউডগী গ্রামে প্রথম ধারে ২০১৬ সালে ১৬টি পরিবার ও ২০১৭ সালে আরো ১২টি পরিবার মোট ২৮টি পরিবার এনজিও ফাউন্ডেশন থেকে স্যানিটারী লেট্রিন পান। যাদের আগে স্যানিটারী লেট্রিন ছিল না এবং তারা কাঁচা ও খোলা লেট্রিন ব্যবহার করতেন। যেমন- মইনজার বাপের বাড়ী, হোনারী বাড়ী, দরবেশের বাড়ী, তৈয়ার বাপের বাড়ী, বেছনির বাপের বাড়ী, নুরার বাপের বাড়ী, হাসিম খলিফার বাড়ী, সফি উল্যাহ মেম্বার বাড়ী, ইয়াসিনের বাপের বাড়ী, হাফিজের বাপের বাড়ী, কাইল্লার বাপের বাড়ী, মিষ্টির বাপের বাড়ী, নুরার বাপের বাড়ী ইত্যাদি বাড়ীর লোক জন ও বাড়ীতে আগত মেহমানরা এই স্যানিটারী লেট্রিন ব্যবহার করছেন। এলাকায় স্যানিটারী ল্যাট্রিন নেই এমন পরিবারের সংখ্যা অনেক। তারা অনুরোধ জানান যে তাদেরকেও যেন একটি স্যানিটারী লেট্রিন দেওয়া হয়। কারণ স্যানিটারী লেট্রিন পেয়ে পরিবারগুলোর জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে।
[author image=”https://www.lakshmipur24.com/wp-content/uploads/2017/10/noormohammad.jpg” ]লেখক:নূর মোহাম্মদ, মানবাধিকার ও উন্নয়ন কর্মী।নির্বাহী পরিচালক ইসলামী সোসাইটি ফর লো লেভেল পিপল- ইসোলপ। [/author]
রোগ-বালাই মুক্ত স্বাস্থ্যবান পরিবার গঠনে স্যানিটারী লেট্রিন ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। ঘরে ঘরে স্যানিটারী লেট্রিন একটি সামাজিক আন্দোলন, আসুন এই আন্দোলনে আপনি, আমি সবাই শরীক হই।
0Share