এমআর সুমন, রায়পুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ইতিমধ্যে উপজেলার মাত্র এক সাপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩১ জনে ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে গত তিন দিনে নতুন করে ২২ জন। আক্রান্তের সংখ্যা জেলার প্রথম স্থানে রয়েছে এ উপজেলায়। যাঁরা নতুন আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে কোনো লক্ষণ নেই। এ ছাড়া অনেকেই করোনার উপসর্গ লুকিয়ে হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসা নিতে আসছেন। রায়পুরে লকডাউন শিথিল থাকার সুযোগে বাজারে উপচে পড়া ভিড়ের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। তাই এ উপজেলায় করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকসহ উপজেলা প্রশাসন । আর এরই মধ্য দিয়ে রায়পুর উপজেলাটি নিরবেই লক্ষ্মীপুর জেলার করোনা হটস্পটে পরিণত হচ্ছে, এমনটাই দাবী সচেতন মানুষদের।
সোমবার (১৮ মে) সকালে নতুন করে আটজন আক্রান্তের তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন। এদের মধ্যে রায়পুর সরকারী হাসপাতালের ৪ জন ডাক্তার, ২ জন নার্স ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন। ল্যাবরেটরিতে করোনা শনাক্তের পরীক্ষার জন্য ২৪ জনের নমুনা পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে ৮ জনের করোনা ‘পজিটিভ’ উল্লেখ করা হয়েছে।
ডা. জাকির হোসেন আরও জানান, নমুনার ফলাফল আসতে দেরি হচ্ছে। নতুন রোগীরা লক্ষণ ছাড়াই আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া করোনার উপসর্গ লুকিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেক রোগী। এ কারণে রায়পুরের অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। পুরোনোদের সংস্পর্শে এসে নতুন রোগীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। দিন দিন করোনার আরও নতুন নতুন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। কারও মধ্যে সামান্য পরিমাণে উপসর্গ দেখা দিলে অথবা সন্দেহ হলে চিকিৎসকের পরামর্শসহ করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। করোনার পরীক্ষা বেশি করা গেলে এবং নিয়মিত ফলাফল পেলে রোগীদের সম্পর্কে বেশি ধারণা পাওয়া যাবে। নমুনা দেওয়ার পাশাপাশি আইসোলেশনে থাকতে হবে। রোগীর স্বজনদেরও সচেতন হতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেজলায় এ পর্যন্ত মোট ৩১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। রায়পুর গত ৪মে প্রথম ১৩ বছরের এক শিশুর নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তাঁর সংস্পর্শে আসা স্বজনসহ ২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। ১৩ মে ল্যাবরেটরিতে পাঠানো প্রতিবেদনে ১৪ জনের করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হয়। এর পর থেকেই সংখ্যাটা বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ১৭ মে ডাক্তার ও নার্সসহ ৮ শনাক্ত হয়। করোনা শনাক্ত হওয়ার আগেই গত দু’টিনে উপজেলার বামনী ও চরমোহনা ইউনিয়নে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান। তবে রায়পুরে এ পর্যন্ত একজনও সুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
0Share