লক্ষ্মীপুরে করোনা ও করোনা উপসর্গে মৃত ২২ লাশ দাফন সম্পন্ন করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। লক্ষ্মীপুরের আলেম-উলামাদের সমন্বয়ে গঠিত স্বেচ্ছাসেবক টিম সারা দেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ কাজ সম্পন্ন করেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লক্ষ্মীপুর অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
লাশ দাফন কমিটির তদারকির দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লক্ষ্মীপুর জেলার উপপরিচালক আশেকুর রহমান
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস সূত্রে জানা যায়, কভিড-১৯ সংক্রমণে মৃত ব্যক্তির কাফন, জানাজা ও দাফনকার্য সম্পাদনের জন্য গত ২৬ মার্চ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক জেলা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকার জোনভিত্তিক টিম গঠন করা হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক লাশ দাফন-কাফনের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য গঠিত টিমকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। লাশ দাফন-কাফনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে কিভাবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে লাশ দাফন-কাফন করা হবে, সেই বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এর পর
লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার করোনা পজিটিভ কিংবা উপসর্গ নিয়ে ধরা পড়লে মৃত ব্যক্তির দাফন জানাজা নিয়ে একটি আতঙ্ক দেখা যেত কদিন আগেও। প্রতিবেশীদের চাপে মৃত ব্যক্তির স্বজনরাও গৃহবন্দি হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে এই স্থানে। প্রথম দিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে মসজিদের ইমামসহ স্কুলের শিক্ষক ও কিছু আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবকের সমন্বয়ে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কোনো রকম সুরক্ষাসামগ্রী ছাড়াই লাশ দাফন-কাফনের দায়িত্ব তুলে নেয় ইফা কর্তৃক গঠিত কমিটি। এ পর্যন্ত এ জেলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ২২টি লাশ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
কমিটির সদস্যরা জানান, মানুষ লাশ দাফন করতে পারছে না, অনেকে ভয়ে জানাজায় আসছে না। আমরা তাঁদের সবার পাশে দাঁড়িয়েছি। রামগঞ্জ উপজেলার লাশ দাফন কমিটির সমন্বয়ক বলেন, করোনায় মারা গেলে ভয়ে স্বজনরা কাছে আসেন না। ইসলামিক ফাউন্ডেশন লাশ দাফন কমিটির সদস্যরা শরিয়া ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন-কাফনের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
উপজেলা দাফন কমিটির সভাপতি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক মো. সেলিম হোসেন বলেন, মার্চ মাসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সিভিল সার্জন অফিসে প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করে মরদেহ দাফনের কাজ শুরু করি। সব ধরনের ভয় উপেক্ষা করে এখন পর্যন্ত আমরা সমাজের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। উপজেলায় যেখানেই আমাদের খবর দেওয়া হয়, আমরা সেখানেই হাজির হই।
0Share