রাত যখন ২টা, ৩টা বা ৪টা। মুমূর্ষু রোগী কিংবা দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় বিপদে পড়ে থাকা রোগীর স্বজনদের ফোন কল পেয়ে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ছুটে যান তিনি৷ করোনার এ দুঃসময়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে উপজেলাবাসীকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক নুর নবী রাসেল। কিন্তু, হঠাৎ তার বদলির আদেশে হতাশ উপজেলার বিভিন্ন স্তরের মানুষ।
তারা বলছেন, রোগী বান্ধব এক অ্যাম্বুলেন্স চালক নুর নবী রাসেল। যে কোন সময় যে কোন বিপদ-আপদে মানুষের পাশে ছুটে যান তিনি। তার এ বদলিতে বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়বে কমলনগর উপজেলার মানুষ। কারণ, স্থানীয় একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক যতটা আন্তরিকতা দিয়ে এলাকার জন্য কাজ করে যাবেন, অন্য কোথাও থেকে কোন অ্যাম্বুলেন্স চালক এসে ততটা আন্তরিকভাবে কাজ করবেন না।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস থেকে বদলির এক আদেশে বলা হয়, কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে বদলি করা হয়েছে। ওই আদেশের কথা শুনে রাসেলের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন স্তরের মানুষ।
অ্যাম্বুলেন্সের সেবাগ্রহণকারী আবদুল মতিন নামের একজন বলেন, কয়েকদিন আগের ঘটনা। রাত যখন ২টা, আম্মু ব্রেন স্ট্রোক করে। তখন কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার নুর নবী রাসেলকে ফোন করি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই তিনি হাজির অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে। তারপর আম্মুকে ঢাকাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই।”
কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক মোঃ রাকিব হোসেন সোহেল বলেন, “আমাদের হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার অসহায় রোগীদের আশার আলো। তার বদলির আদেশ আমরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না। আমাদের বিরাট একটা ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগকে টিকিয়ে রাখতে তার এ বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাই।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু তাহের পাটোয়ারী বলেন, “অভ্যন্তরীণ কিছু কারণে তাকে রায়পুরে বদলি করা হয়েছে। তবে, বিষয়টি নিয়ে আমরা আরো ভাবছি। সে যেহেতু এলাকার, সেক্ষেত্রে স্থানীয় লোক হিসেবে অ্যাম্বুলেন্সের সেবা ভালো দিয়েছেন বা দিতে পারবেন।৷ আমি বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জন মহোদয়ের সঙ্গে আলাপ করবো, এ বদলির আদেশ প্রত্যাহারের জন্য।”
0Share