সানা উল্লাহ সানু: ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে নানা জনের নৈতিবাচক মনোভাব আছে । কিন্তু নৈতিবাচক এ ফেসবুকই যে প্রয়োজনে মানুষের জীবন বাচাঁতে পারে সে উদহারণও আছে অসংখ্য। আবার সময়ের নৈতিবাচক এ ফেসবুকে কাজ করে যে রাতারাতি বিখ্যাত হওয়া যায় সে উদহারণ ও কম নেই।
তেমনি ফেসবুকে কাজ করে নিজ কে গণ্যের কাতারে প্রতিষ্ঠিত করেছেন চট্টগ্রামস্থ লক্ষ্মীপুরের ছাত্রী নিশি আক্তার । নিশির জন্ম লক্ষ্মীপুর পৌরসভার শাহাপুরে । বাবার নাম আবুল কালাম। বাবার চাকুরীর আর নিজের পড়াশোনার জন্য ৬ বছর থেকে বসবাস করছেন চট্টগ্রামে। পড়াশোনা করছেন চট্টগ্রাম পলিটেকনিক্যাল কলেজে ইলেকট্রনিক্স ও টেকনোলজি বিষয়ে।
ফেসবুকে তার নাম লিও নিশি আক্তার হলেও লিংকডরা তাকে রক্ত মানবী নামেই জানেই। আবার কেউ কেউ তাকে জীবন বাঁচানোর দূত বলে ডাকে।
কারণ নেশা হিসাবেই দিন রাত ২৪ ঘন্টা তার সকল স্ট্যাটাস রক্ত নিয়েই। ফেসবুকে তার এক একটি স্ট্যাটাসে এক একটি নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়। প্রতিদিনই সে রক্ত চেয়ে নিজের প্রোফাইল ও গ্রুপে পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন।
তার দেয়া সে পোস্ট গুলোর পিছনে মানবতা ছাড়া কোন কিছুর বিনিময় নেই। তাই অচেনা-অজানা মানুষের সঙ্গে তৈরি করে চলছেন রক্তের বন্ধন।
পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গড়ে তুলেছেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। নিশির সঙ্গে সেচ্ছা কাজ করছেন বিভিন্ন শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও অন্যান্য অনলাইন এক্টিভিস্টরা।
নিশি জানান, চার বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে ও জাতীয় দিবসগুলোতে নিজেরাই ক্যাম্প তৈরি করে রক্তদান উদ্বুদ্ধকরণের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন তিনি । তিনি দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ক্যাম্পের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় রক্তদান, ব্লাড গ্রুপিং, রক্ত সংরক্ষণ, স্ক্রিনিং ও ক্রসম্যাচিং পরীক্ষার কাজেও সহযোগিতা করে আসছেন।
কাজের স্বীকৃত স্বরুপ রক্ত মানবী নামেই গত ২২ জুলাই তারিখে রামগতি-কমলনগর অনলাইন এক্টিভিস্ট ফোরাম তাকে দিয়েছে সেরা সংগঠকের সম্মাননা।
নিজ কাজ সম্পকে নিশির বক্তব্য হচ্ছে, একজন মানুষের সবচেয়ে দামি উপহার রক্ত। জীবনের জন্য রক্ত ও রক্তের উপাদানগুলোর কোনো বিকল্প নেই। আবার রক্তদান সামাজিক অঙ্গীকার। তাই এটি মানবিক দায়বদ্ধতাও বটে।
তার মতে, সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মধ্যে সার্বিক সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে জাতীয়ভাবে রক্তদান কেন্দ্র গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।
কিন্তু আমাদের দেশে প্রতিটি কেন্দ্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষার গুণগত মান যাচাই করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
তাই তার প্রত্যাশা ভবিষ্যতে সারাদেশে বিভাগভিত্তিক সাতটি রিজিওনাল সেন্টার স্থাপন করা।
প্রসঙ্গত: চিকিৎসকদের মতে, ১৮ থেকে ৫৭ বছর বয়সী যে কোনো সুস্থ ব্যক্তি চার মাস অন্তর স্বেচ্ছায় রক্তদান করতে পারেন। সেচ্ছা রক্তদান অসহায় মানুষের জীবন বাচাঁতে পারে।
0Share